আফরোজা আব্বাসের বাড়িতে সাবের

প্রতিহিংসার রাজনীতির চর্চা বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন কিছু নয়। বিরোধী পক্ষ তো বটেই কখনও কখনও এ থেকে রেহাই পায় না নিজ দলের নেতা-কর্মীরাও। বিরোধী পক্ষের কারো সঙ্গে মিটিং, সমঝোতা তো দূরের কথা মুখ দেখাদেখিই যেন নিয়ম বহির্ভূত। এই ধারা বহুদিন ধরে লালন করে আসছিলেন আমাদের দেশের রাজনীতিকরা। কিন্তু সময় বদলেছে। বদলেছে এদেশের রাজনীতিকদের ধ্যান-ধারণা, রাজনৈতিক মতাদর্শ। এরই এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন এবারের জাতীয় নির্বাচনের ঢাকা-৯ আসনে আওয়ামী লীগের বিজয়ী প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী। সব তিক্ততা ভুলে সম্প্রীতির পরিবেশ সৃষ্টিতে এগিয়ে এলেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কুশল বিনিময় করতে আফরোজা আব্বাসের শাহজাহানপুরের বাসায় গিয়েছিলেন সাবের হোসেন।
যদিও ঢাকা-৯ আসনে গণসংযোগে নেমে কয়েক দফা হামলার মুখে পড়েছিলেন বিএনপির প্রার্থী আফরোজা আব্বাস। ঐ হামলার সকল অভিযোগের তীর ছিল প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাসীন দলের সাবের হোসেন চৌধুরীর কর্মীদের দিকে। এ নিয়ে খোদ সাবের হোসেন চৌধুরীও ছিলেন ব্যাপক অস্বস্তিতে।
গতকাল বেলা তিনটায় আব্বাস দম্পতিকে আগাম না জানিয়ে হঠাৎ করেই সাবের হোসেন চৌধুরী আফরোজা আব্বাসের বাসায় যান। এ সময় তাঁর সঙ্গে কোনো নেতা-কর্মী ছিলেন না। তিনি মির্জা আব্বাসের বাসায় দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে করমর্দন করে তাদের খোঁজখবর নেন। তখন অবশ্য আফরোজা আব্বাস বাসায় ছিলেন না। আফরোজার স্বামী মির্জা আব্বাস ছিলেন বাসায়। ঘরোয়া পোশাকেই অতিথিকে অভ্যর্থনা জানান আব্বাস। পরে তাঁরা প্রায় ৪০ মিনিট বিভিন্ন বিষয়ে একান্তে কথা বলেন। এরপর সাবের হোসেন চৌধুরীকে গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। হাসিমুখেই মির্জা আব্বাস হাত মিলিয়ে সাবের হোসেন চৌধুরীকে বিদায় জানান।
সাবের হোসেন চৌধুরীর হঠাৎ আগমন এবং হাসিমাখা মুখ দেখে হতবাক হয়ে যান নিরাপত্তাকর্মী এবং সেখানে অবস্থানরত আব্বাসের কয়েকজন সমর্থক।
সময়ের সঙ্গে বদলে যায় সবই। সময় এসেছে প্রতিহিংসার রাজনীতি ছেড়ে ইতিবাচক ধারার রাজনীতির চর্চার। অতীতের সব তিক্তটা ভুলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রতি সৌহার্দ্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় সাবের হোসেন চৌধুরীকে বাহ্বা দিচ্ছে সবাই।

Facebook Comments