মাদক ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করা আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ: র‌্যাব ডিজি

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের(র‌্যাব) মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন আমেরিকার নিষেজ্ঞা প্রসঙ্গে বলেছেন, আমাদের কিছু কর্মকান্ড নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছিলো। তারা যে সমস্ত বিষয়ে জানতে চেয়েছে আমরা যথাযথভাবে সমস্ত প্রশ্নের জবাব দিয়েছি ডকুমেন্টসসহ। সে সব তারা ‌পর্যালোচনা করছে।

তিনি বলেন, আমি বিগত ৫ মাস দায়িত্ব নিয়েছি। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে র‌্যাব মানবাধিকার সম্মুন্নত রেখে এই দেশের নিরাপত্তার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বৃহস্পতিবার (২মার্চ) দুপুরে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

র‌্যাব প্রসঙ্গে ডিজি বলেন, র‌্যাব হলো এ্যালিট ফোর্স। সমস্ত বাহিনী থেকে চৌকস, ভাল অফিসারদের বেছে র‌্যাব তৈরী করা হয়েছে। র‌্যাব ফোর্সের মূল শ্লোগান হলো “বাংলাদেশ আমার অহংকার”। আমরা কাজ করি দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য। আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধু সারা জীবন ভালবেসেছেন দেশ ও দেশের মানুষকে। আমরা সেই আদর্শকে লালন করে দায়িত্ব পালন করে যাই।কাজ করতে গেলে কিছু ক্রুটি হতেই পারে, দেখতে হবে পার্সেটেন্স কত সেখানে। সামান্য কিছু দূর্ঘটনা হয়তো ঘটেছে, সেটা হয়তো শতকরা এক ভাগের নিচে হবে অথবা শতকরা ৫ ভাগও হতে পারে। সেটা শুধু আমাদের দেশে নয়, সারা বিশ্বে এমনই হয়।

র‌্যাবের কাজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কাজ যারা করে ভুল তাদের হবেই। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে যে, আমরা র‌্যাব ফোর্সের যে সদস্যরা আমাদের প্রচলিত যে আইন রয়েছে, আমরা তার মধ্য থেকেই কাজ করি এবং যদি কোন সদস্য অস্বাভাবিক কোন কাজ করে, যেটা তার করা উচিত না। অথবা নৈতিকতা বিরোধী কোন কাজ করে থাকে তাহলে আপনারা জানেন, র‌্যাব ফোর্স এমন একটা বাহিনী এখানে অন্যায় করে কারও পার পাওয়ার সুযোগ নাই। তাকে যথাযথভাবে শাস্তি দেয়া হচ্ছে। যে কোন ঘটনা ঘটলে আমরা সাথে সাথে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে যেখানে যেখানে জানানো প্রয়োজন সবাইকে জানিয়ে দেই। দেশের কোন সংস্থাই স্বাধীন না, প্রত্যেকেরই জবাব দিহিতা আছে

তিনি আরো বলেন, দেশের যে অবস্থা হয়েছিলো জঙ্গিবাদে-এই র‌্যাবই জঙ্গিবাদকে নির্মূল করেছে। সর্বশেষ পার্বত্য অঞ্চলে যে অবস্থা হয়েছিলো, যেটা কোন অবস্থাতেই র‌্যাব ছাড়া অন্য কেউ পারতো কিনা সন্দেহ আছে। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় আমরা সেখানেও তা নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছি।

র‌্যাবের চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মাদক ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করা। ২০১৬ সালে যখন জঙ্গিবাদের শুরু হলো, শুরু হয়েছিলো মূলত ২০০৫ সালে জোট সরকারের আমলে। সেই বাগমারা রাজশাহী আত্রাই নওগাঁ থেকে বাঙলা ভাই সিদ্দিকুর রহমান। আপনারা সব ইতিহাস জানেন। জঙ্গিবাদকে নির্মূল করেছে শুধু আইন শৃংখলা বাহিনী না। সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমের এই জঙ্গিবাদকে নির্মূল করা হয়েছে, যেখানে সাংবাদিকদের একটা বড় ভূমিকা ছিলো। সাংবাদিকদের আমরা আমাদের তদন্তের একটা অংশ মনে করি। সাংবাদিকদের তথ্য আমাদের কাজে লাগে।সাংবাদিকদের কখনো আমরা প্রতিপক্ষভাবি না। তাদের আমরা সহযোগি মনে করে কাজ করি

মাদক নির্মূল প্রসঙ্গে র‌্যাব ডিজি বলেন, সামনে তাদের বড় চ্যালেঞ্জ হলো মাদক। এই মাদক নির্মূল করতে হলে শুধু আইনশৃংখলা বাহিনী দিয়ে সম্ভব না। শুধু মাত্র মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর পারবে না। আবার সেই সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে এটা বন্ধ করতে হবে। এখন যদি জাতিকে মাদক দিয়ে ধ্বংস করে দেয়া হয়। তাহলে পরবর্তি দেশ কারা পরিচালনা করবে। সে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বা প্রশাসনিক ক্ষেত্রে হতে পারে। এটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। আমরা সবাই মিলে সমাজকে সচেতন করি, যাতে আমরা এই সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করতে পারি।

জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে র‌্যাব ডিজি বলেন, সামনে নির্বাচন আসছে। অন্যান্য আইন শৃংখলা বাহিনীর সাথে একত্রিত হয়ে আমরা কাজ করবো। আমরা চাই সুষ্ঠু সুন্দর নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। দেশের গণতান্ত্রিকধারা অব্যাহত থাকবে।

এর আগে, র‌্যাবের মহাপরিচালক জাতির পিতার সমাধি সৌধের বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পন করে গভীর শ্রদ্ধা জানান। পরে বঙ্গবন্ধু ও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট শাহাদাত বরণকারী তাঁর পরিবারের সদস্যদের রুহেরে মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো.বাবুল শেখ, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সাইফুল ইসলামসহ র‌্যাবের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Facebook Comments