এখন ইভিএম কেনা সমীচীন নয়: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘মানুষের কল্যাণ অগ্রাধিকার উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ইভিএম পদ্ধতির জন্য পৌনে ৯ হাজার কোটি টাকা অর্থাৎ প্রায় এক মিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্প প্রস্তাব করেছে, যেহেতু ইভিএমগুলো কিনতে হবে, কিন্তু এই বিশ্বমন্দার প্রেক্ষাপটে এই প্রকল্প পাস করে ইভিএম কেনা সমীচীন নয়, কারণ এই সময় আমাদের কাছে মানুষের অন্যান্য কল্যাণ অগ্রাধিকার।’

তিনি বলেন, ‘মন্দাপীড়িত বিশ্বে মানুষের কল্যাণই সর্বাগ্রে এবং সে কারণে ইভিএম প্রকল্পে এক মিলিয়ন ডলার ব্যয় না করে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে যত আসনে ইভিএম করা সম্ভব, আমরা সেটা মেনে নেবো।’

রবিবার (২৯ জানুয়ারি) রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জনসভার প্রস্তুতি উপলক্ষে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে শনিবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইভিএম নিয়ে প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

ড. হাছান বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছি। আমরা অবশ্যই চাই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) যে আধুনিক প্রযুক্তি এখন বিশ্বে ব্যবহার হয়, যেখানে কারচুপি বা অন্য কোনও সুযোগ নেই, সেটি ব্যবহার করতে। আগে খালেদা জিয়ার স্লোগান ছিল ‘দশটা হোন্ডা, বিশটা গুণ্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা’, এগুলো বন্ধ করার জন্য আমরা ইভিএম চেয়েছি।’

‘তাই আমরা চাইলেও বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন যদি সব আসনে ইভিএমে ভোট করতে না পারে, যে কয়টি আসনে করতে পারুক, আমরা সেটা মেনে নেবো’, বলেন হাছান।

জিততে পারবে না জেনেই নির্বাচন নিয়ে বিএনপির টালবাহানা
নির্বাচনকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি অনড়, এ নিয়ে প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশ যেমন ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কন্টিনেন্টাল ইউরোপের দেশগুলোর মতোই আমাদের দেশে সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হবে। জিততে পারবে না জেনেই বিএনপি নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করে।’

উদাহরণ দিয়ে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি ডান-বাম-অতি ডান-অতি বাম সব দলকে সঙ্গে নিয়ে ২০০৮ সালের নির্বাচন ও তারপর উপনির্বাচন মিলে ৩০টির মতো আসন পেয়েছিল। ২০১৪ সালে নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে বিএনপি পাঁচশর বেশি ভোটকেন্দ্র স্কুল ও সেখানকার শিক্ষার্থীদের বই-খাতা পুড়িয়ে দিয়েছে, কয়েকজন নির্বাচন কর্মকর্তাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও সংশয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত সব রকম জোট করে ছয়টি আসন পেয়েছে।’

‘সহজেই বোঝা যায়, নির্বাচনে জেতার কোনও আশা তাদের নেই আর সে কারণেই তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অলীক স্বপ্ন, এত টালবাহানা’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘আমরা চাই, সব দল নির্বাচনে আসুক, আমরা খেলেই জিততে চাই।’

‘রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের জনসভায় তেমন লোক হবে না’, বিএনপি নেতাদের এমন মন্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যেসব নেতা রাজশাহীতে লোক হবে না বলছেন, তাদের এসে দেখে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। তারা চাইলে প্রয়োজনে হেলিকপ্টার দিয়ে তাদের আনার ব্যবস্থা করা হবে।’

রবিবার জনসভায় ১৪ দলের নেতারা যোগ দিতে পারবেন কিনা, এ প্রশ্নে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জনসভাটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের, ১৪-দলীয় জোটের নয়। তবে আমাদের জোটের শরিকরা আমন্ত্রিত, তারা এলে আমরা খুশি হবো।’

আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, সংসদ সদস্য মো. আয়েন উদ্দিন, দলের কেন্দ্রীয় সদস্য বেগম আকতার জাহান, রাজশাহী মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল সরকার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Facebook Comments