জঙ্গির কবর খুঁড়ে মিলল কম্বল, লাশ উধাও

গত ১১ জানুয়ারি বান্দরবানের দুর্গম এলাকা থেকে পাঁচ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। তাদের মধ্যে দুজনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নিহত এক জঙ্গির লাশ কবর থেকে উদ্ধার করতে যান র‍্যাবের সদস্যরা। কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে কবর খুঁড়ে লাশের বদলে কম্বল পেয়েছেন তারা।

জঙ্গির মরদেহ উদ্ধার করতে গিয়ে শূন্য হাতে ফিরেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। রবিবার (১৫ জানুয়ারি) হেলিকপ্টার নিয়ে সেখানে পৌঁছে কবর খুঁড়ে অন্যান্য আলামত পেলেও লাশের কোনো সন্ধান পায়নি তারা।

র‌্যাব দাবি করছে, তারা সেখানে পৌঁছানোর আগেই অন্য কোনো জঙ্গি সংগঠন কিংবা পার্বত্য চট্টগ্রামে নবগঠিত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট’ লাশটি তুলে নিয়ে যেতে পারে।

অভিযানে সঙ্গে থাকা এক প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, ঘটনাস্থল থানচি উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার, রুমা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার এবং বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার ভেতরের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা। সেখানে পৌঁছতে তাদের ৯ ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে। দুর্গম এলাকার আশপাশে একটিমাত্র পাড়া ছাড়া অন্য কোনো বসতি নেই।

র‌্যাবের সঙ্গে লাশ উদ্ধার অভিযানে রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুন শিবলী সাংবাদিকদের জানান, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মরদেহ উত্তোলনের জন্য তারা সেখানে গিয়েছিলেন। গ্রেপ্তারকৃত দুই জঙ্গি কবরস্থান দেখিয়ে দেয়। কিন্তু কবর খুঁড়ে সেখানে কিছু পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, ‘আমরা সামান্য কিছু আলামত পেয়েছি। সেগুলো নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু এসব আলামত দেখে ঘটনার আসল রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব নয়।’

রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, রুমা উপজেলার রেমাক্রি-প্রাংশা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডভুক্ত লুংয়ংমুয়াল পাড়া থেকে কিছুটা দূরে এ কবরের অবস্থান। আদালতের নির্দেশ পেয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে তিনজন পুলিশ সদস্যকে পাঠানো হয়। মরদেহ উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়ে ফিরে আসা পুলিশ সদস্যরা তাকে জানিয়েছেন, কবর খুঁড়ে মরদেহের পরিবর্তে একটি কম্বল পাওয়া গেছে।

এদিকে র‌্যাবের একটি সূত্র জানায়, গত ১১ জানুয়ারি গ্রেপ্তারকৃত পাঁচ জঙ্গির মধ্যে দুজন এই লাশের তথ্য দেয়। তাকে হত্যা করা হয়েছে বলেও জানায় গ্রেপ্তার জঙ্গিরা। জঙ্গিদের তথ্য মতে, লুংয়ংমুয়াল পাড়া থেকে কিছুটা দূরে তাকে কবর দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) র‌্যাব ও পুলিশের একটি দল ওই দুই জঙ্গিকে সঙ্গে নিয়ে সেই কবরটি চিহ্নিত করে আসে। তখন মরদেহ সেখানে ছিল বলে তাদের মনে হয়েছে।

কবর খুঁড়ে লাশ না পাওয়া প্রসঙ্গে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মুঈন জানান, কুমিল্লা থেকে একই সময়ে স্বেচ্ছায় হিজরত/নিখোঁজ হওয়াদের মধ্যে আমিনুল ইসলাম ওরফে আল আমিন নামে এক ব্যক্তিও নিখোঁজ হয়। অন্তর্দ্বন্দ্বের জের হিসেবে আল আমিনকে হত্যা করে কবরস্থ করা হতে পারে। কিন্তু কবর খুঁড়ে কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি।

Facebook Comments