‘শুধু দলীয় প্রতীকের কারণে সংঘাত হচ্ছে এটা ঠিক নয়’ : প্রধানমন্ত্রী

চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে শুধু দলীয় প্রতীকের কারণে সংঘাতের ঘটনা ঘটছে এটা মানতে নারাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে কোনো সংঘাতই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করেন তিনি। চলমান এই সংঘাতের পেছনে দলীয়ভাবে অংশ না নিলেও বিএনপির একটা ভূমিকা আছে বলে জানান সরকার প্রধান।

বুধবার বিকালে গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স সফর সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দলীয় প্রতীক দেওয়ার কারণে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংঘাত হচ্ছে এই কথাটি ঠিক নয়। তবে কোথাও কোথাও সংঘাত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ তো শুধু চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক দিয়েছে। নির্বাচন মেম্বার পদেও হচ্ছে। তাদের মধ্যেও মারামারি হচ্ছে। তাছাড়া অন্যান্য দলও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। বিএনপি দলীয়ভাবে অংশ না নিলেও তাদের প্রার্থীরাও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। সুতরাং দলীয় প্রতীক দেওয়ার কারণে সংঘাত হচ্ছে- কথাটি মোটেও ঠিক নয়।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘ইলেকশন সবাই করছে। আমরা যেমন আওয়ামী লীগের নামে করছি, বিএনপি নাম ছাড়া করছে। অন্যান্য দলও করছে। তারা (বিএনপি) সিদ্ধান্ত নিয়ে দলীয়ভাবে নির্বাচন করবে না। সেখানে এই যে হানাহানি-মারামারিটা ঠিক কোথায় হচ্ছে, কাদের মধ্যে হচ্ছে, সেটা আপনারা দেখেন। আমার দলের ভেতর যেগুলো হবে, সেগুলো অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা নেব।’

নির্বাচনে সহিংসতা হোক সরকার তা চায় না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাণহানি আমরা চাই না। এটা হওয়া উচিত না। যেখানে যেখানে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে যথাযথ ব্যবস্থা আমরা নেব, নিচ্ছি।’

দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের নমিনেশন দিয়েছি, তাদের বাইরে যারা ইলেকশন করেছে, যতই ভালো বিদ্রোহী হোক, আমরা নমিনেশন দিইনি। বিদ্রোহী হয়েছে। এত বড় একটা দল, হবে, কিন্তু দলের কোনো নেতৃত্ব সেটা ইউনিয়ন পর্যায়ে হোক, উপজেলা পর্যায়ে হোক, জেলা পর্যায়ে, যারা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। সেটা আমরা ছাড়ব না।’

ইউপি নির্বাচনে বিএনপি চালাকি করেছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘আর এর বাইরে যারা হানাহানি করল, যেহেতু তারা (বিএনপি) দলীয়ভাবে ইলেকশন করেনি, তাদের দলের নামটা আসছে না। সেদিক থেকে তাদের চালাকিটা ভালো। এটা আমি বলব, ভালো একটা চালাকি তারা করে নিয়েছে। ইলেকশনও করছে, মারামারিও করছে, আবার উসকেও দিচ্ছে। আবার হয়তো আমাদের বিদ্রোহীকে সমর্থন দিয়ে সেখানে আরও একটা মারামারি বাধিয়ে দিচ্ছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির প্রার্থী না দেওয়ার সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি দাবি করেন, বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি না থাকার কারণে প্রার্থী দিতে পারেনি। এছাড়া জনগণ আওয়ামী লীগকে বেছে নেবে, বিএনপিকে ভোট দেবে না, এজন্যও দলটি প্রার্থী দেয়নি বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি।

সিনিয়র সাংবাদিকরা গণভবন থেকে সঙ্গে সরাসরি এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে থাকা সাংবাদিকরা ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন গণভবনে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম গণভবন থেকে সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন।

Facebook Comments