সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমান স্বপন অত্যন্ত জনবান্ধব ছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে এক সময় সর্বহারাদের দৌরাত্ম্য ছিল। খুব একটা অস্বাভাবিক পরিবেশ। ওই এলাকায় স্বপন ছিল। আমরা সেখানকার বিভিন্ন উন্নয়নকাজ করি। পরে ধীরে ধীরে ওই জায়গাটা উন্নত হয়।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সংসদে হাসিবুর রহমান স্বপনের মৃত্যুতে আনা শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শোকের মাস শেষ হতে না হতেই সেপ্টেম্বর মাসে সংসদ শুরু হলো, আর তা শুরুই করতে হলো শোক প্রস্তাব নিয়ে। আজ দ্বিতীয় দিন আবারও শোক প্রস্তাব নিতে হলো। একের পর এক দুঃসংবাদ নিয়েই আমাদের চলতে হচ্ছে সেটাই হচ্ছে খুব দুঃখজনক।
প্রধানমন্ত্রী সবার জন্য বিশেষ করে এই করোনার হাত থেকে দেশের মানুষ যেন রক্ষা পায় সেজন্য দোয়া কামনা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, কষ্টের ভেতর দিয়ে আমাদের সবাইকে যেতে হচ্ছে। এই পার্লামেন্টে আসার পর আমরা অনেককে হারিয়েছি।
এসময় প্রধানমন্ত্রী অসুস্থ ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার জন্য দোয়া চেয়ে বলেন, আমাদের ডেপুটি স্পিকার অসুস্থ। তিনি বিদেশে চিকিৎসায় আছেন। আপনারা দোয়া করবেন তিনি যেন সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসতে পারেন।
তিনি বলেন, করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে আমাদের বহু সহকর্মীকে হারিয়েছি, অনেক সংসদ সদস্যকে আমরা হারিয়েছি।
হাসিবুর রহমান স্বপন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি কিডনি ট্রান্সফার করার পর কিছুদিন সুস্থ ছিলেন। এরপর একবার করোনা হয়। করোনা থেকেও তিনি ভালো হয়ে যান। কিন্তু তার পরই সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার কিডনি ট্রান্সফার হয়েছিল। কোনো আপনজন ছাড়া বাইরের কারও যদি কিডনি ট্রান্সফার করা হয় সেটা শরীরের সঙ্গে সাধারণত এডজাস্ট হয় না। অনেকেই কিন্তু টিকতে পারে না। অনেকেই পারে। তবে আমি দেখেছি এরা খুব বেশি দিন টিকতে পারে না। যদি ভাইবোনের মধ্যে হয় তাহলে সমস্যা হয় না। অনেক নিয়ম মেনে চলতে হয়। আমি সব সময় তাকে খাওয়া-দাওয়া, চলাফেরা ও মানুষের সঙ্গে কথা বলা- সবকিছুতেই সাবধান থাকতে বলতাম। কিন্তু রাজনীতিবিদ হলে মানুষের ডিমান্ড থাকে। তিনি ছিলেন খুবই জনপ্রিয় ও কর্মীবান্ধব। তাছাড়া অনেক সামাজিক কাজ করেছেন। স্কুল-কলেজ তৈরি করেছেন, মিল্কভিটার কমিটির সদস্যও ছিলেন। তার জন্য কাজ করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, এই করোনায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে থেকে তাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছে। স্বপন নিজের শারীরিক অবস্থার কথা চিন্তা না করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। যারা জনগণের জন্য কাজ করে তাদের মৃত্যুটা দেশের জন্য, মানুষের জন্য বেশি ক্ষতির।