সেই ছাত্রী ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ডিজে নেহার খালাতো ভাই কারাগারে

রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) শিক্ষার্থী মাধুরীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় করা মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়টির আরেক শিক্ষার্থী শাফায়াত জামিল বিশালকে (২২) কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। এই বিশাল সম্প্রতি চাঞ্চল্যকর ঘটনার অন্যতম হোতা ডিজে নেহার খালাতো ভাই বলে পরিচিত দিতো। যে ডিজে নেহার ডানহাত এবং তার খুবই ঘনিষ্ট বলে জানা গেছে।

আজ শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ৩ দিনের রিমান্ড শেষে এই শাফায়ত জামিল বিশালকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

অপরদিকে তার আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একই সঙ্গে তার জামিন শুনানির জন্য ১৪ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য জামিলকে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।

গত মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসি শুনানি শেষে তার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন শাফায়াত জামিল বিশাল (২২)। সেদিন আদালতে হলফনামা দিয়ে মামলায় সম্পৃক্ততার ইচ্ছা প্রকাশ করেন শাফায়াত। এরপর বিচারক ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে ৩১ জানুয়ারি ৪ জনকে আসামি করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেছিলেন নিহত তরুণীর বাবা, যিনি চট্টগ্রামের বাসিন্দা। সংশ্লিষ্ট মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১ জনকে আসামি করা হয়েছিলো।

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, গত ২৮ জানুয়ারি বিকেল ৪ টায় মর্তুজা রায়হান ওই তরুণীকে নিয়ে মিরপুর থেকে বন্ধু আরাফাতের বাসায় যান। সেখানে স্ক্রুটার রেখে আরাফাত, মাধুরী এবং রায়হান একসঙ্গে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ব্যাম্বু স্যুট রেস্টুরেন্টে যান। সেখানে আগে থেকেই আরেক আসামি নেহা এবং একজন সহপাঠী উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আসামিরা ওই তরুণীকে জোর করে ‘অধিক মাত্রায়’ মদপান করায়।

মদপানের পর একপর্যায়ে ভুক্তভোগী মাধুরী অসুস্থ বোধ করলে রায়হান তাকে মোহাম্মদপুরে বান্ধবীর বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তারা উভয়ে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হয়। যে ঘটনাটির বিপরীতে ওই ছাত্রীর বাবা মোহাম্মদপুর থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। ওইদিন রাতে সেই তরুণী অসুস্থ হয়ে বমি করলে রায়হান তার আরেক বন্ধু অসিম খানকে ফোন দেন। সেই বন্ধু পরদিন এসে তরুণীকে প্রথমে ইবনে সিনা ও পরে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ২ দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর তার মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় তাদের আরেক বন্ধু আরাফাতও মারা যায়া।

ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা ধারণা করছেন, মদের বিষক্রিয়া কিংবা অতিরিক্ত মদ পানে কারনে তাদের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। ল্যাব থেকে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলেই এ বিষয়ে স্পষ্টভাবে মন্তব্য করবেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎকরা।

Facebook Comments