১৪তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব শুরু

আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব বাংলাদেশের ১৪তম আসরের পর্দা উঠল। উৎসবে ঢাকার তিনটি ভেন্যুতে ৩৭টি দেশের ১৭৯টি শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। চিলড্রেনস ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশ আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী এ উৎসব চলবে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তন প্রাঙ্গণে পতাকা ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে এবং প্রদীপ প্রজ্বালন করে উৎসব উদ্বোধন করা হয়। মিলনায়তনে ছিল উদ্বোধনী আলোচনা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী এস এম খালিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন পরিচালক ফারিহা জান্নাত মীম। সভাপতিত্ব করেন চিলড্রেন’স ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম।

হাছান মাহমুদ বলেন, এ ধরনের উৎসব শিশু-কিশোরদের মেধা, মনন ও দেশপ্রেমে উৎসাহিত করে দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতি মমতা জাগাতে অত্যন্ত সহায়ক।

কে এম খালিদ বলেন, শিশু চলচ্চিত্র উৎসবটি শিশু-কিশোরদের পরিচালনায় আয়োজিত হচ্ছে, যা অত্যন্ত আনন্দের। এটি তাদের সৃষ্টিশীলতার নজির।

আজ রবিবার থেকে শাহবাগের কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান মিলনায়তন, জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তন ও শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে প্রতিদিন সকাল ১১টা, দুপুর ২টা, বিকেল ৪টা ও সন্ধ্যা ৬টায় চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।

প্রতিটি প্রদর্শনীতে একাধিক শিশুতোষ চলচ্চিত্র দেখানো হবে। উৎসবের সব প্রদর্শনী অভিভাবক, শিশু-কিশোরসহ সবার জন্য উন্মুক্ত। পুরো উৎসবটি স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা করা হবে। মাস্ক পরিধানকে চলচ্চিত্র উৎসবের টিকিট হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

উৎসবের ‘ইয়ং বাংলাদেশী ট্যালেন্ট’ বিভাগে ১৯ থেকে ২৫ বছর বয়সী তরুণ নির্মাতাদের নির্বাচিত ১৯টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। পাঁচটি চলচ্চিত্রকে পুরস্কৃত করা হবে। মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে রয়েছে ‘মুক্তির চলচ্চিত্র’ শিরোনামে বিশেষ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী বিভাগ। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগে দেখানো হবে বাংলাদেশসহ ৩৭টি দেশের নির্বাচিত ১১৬টি চলচ্চিত্র।

গত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও বিভিন্ন দেশের শিশুদের নির্মিত চলচ্চিত্র নিয়ে থাকছে প্রতিযোগিতা বিভাগ। এ বিভাগে একটি চলচ্চিত্রকে পুরস্কার দেওয়া হবে। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নতুন একটি সামাজিক চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতা বিভাগ রাখা হয়েছে ‘নিউ নরমাল’ শিরোনামে।

উৎসবে প্রতিনিধিদের জন্য চারটি কর্মশালা ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। ডিরেকশন ও সিনেমাটোগ্রাফির ওপর কর্মশালা পরিচালনা করবেন অমিতাভ রেজা চৌধুরী ও তাহসিন রহমান। স্ক্রিপ্টরাইটিংয়ের ওপর কর্মশালা পরিচালনা করবেন সাদিয়া খালিদ রীতি, প্রডাকশন ডিজাইনের ওপর কর্মশালা পরিচালনা করবেন রঞ্জন রাব্বানী, ফেস্টিভ্যাল সার্কিট সম্পর্কে কর্মশালা পরিচালনা করবেন আবু শাহেদ ইমন।

এ ছাড়া শিশু-কিশোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ আড্ডায় উপস্থিত থাকবেন বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীরপ্রতীক, মো. মাশরুকুল হক এবং মারুফা মাশরুক। সেলিব্রেটি আড্ডায় থাকবেন প্রথম বাংলাদেশি নারী এভারেস্টজয়ী পর্বতারোহী নিশাত মজুমদার। এ ছাড়া থাকছেন সংগীতশিল্পী সায়ান চৌধুরী অর্ণব ও সুনিধি নায়েক।

Facebook Comments