বিএনপি প্রমাণ করেছে তারাই খুনিদের দল : তথ্যমন্ত্রী

দেশবাংলা ডেস্ক

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন,১৫ আগস্ট জাতির পিতা ও তার পরিবারের শাহাদতবার্ষিকীতে বেগম জিয়ার রোগমুক্তি প্রার্থনায় পক্ষান্তরে তার ‘ভুয়া জন্মদিন’ পালন করে বিএনপি প্রমাণ করেছে তারাই খুনিদের দল।

রোববার (১৬ আগস্ট) রাজধানী কাকরাইলের সার্কিট হাউজ রোডে তথ্য ভবনের মিলনায়তনে ‘জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে তথ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

তথ্য সচিব কামরুন নাহার সভায় সভাপতিত্ব করেন।সভার শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও পরিবারের শহীদ সদস্যদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

মন্ত্রী বলেন,আমরা দেখতে পাই, এতদিন ১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালনের পর তারা সেটি আর পালন না করার ঘোষণা দিল। আবার গতকাল দেখলাম, ১৫ আগস্ট যেদিন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হয়েছে, সমগ্র বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু ও পরিবারের শহীদ সদস্যদের আত্মার শান্তি কামনায় মিলাদ হচ্ছে, হত্যাকারীদের নিন্দায় বিক্ষোভ-সমালোচনা হচ্ছে, সেখানে তারা (বিএনপি) বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় মিলাদ মাহফিল করল।

এই মিলাদ আপনারা ১৪ তারিখ করলেন না কেন, ১২ তারিখ বা ১৬ তারিখ করলেন না কেন?’- প্রশ্ন করে ড. হাছান বলেন,১৫ আগস্ট বেগম জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় মিলাদ মাহফিল করে বিএনপি আসলে তার জন্মদিন পালন করেছে, জনগণের চাপে সেটি বলতে লজ্জা লাগছে। এর মাধ্যমেই প্রমাণ হয়, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে শুধু জিয়াই যুক্ত ছিল না, খালেদা জিয়ারও সায় ছিল এবং তাদের দলটিই হচ্ছে খুনিদের দল।

তিনি বলেন, বেগম জিয়ার জন্মের বিভিন্ন তারিখের ঘটনা যদি ইউরোপের কোনো রাষ্ট্রে হতো, তাহলে তিনি প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা, সংসদ সদস্য হওয়া বা রাজনীতি করারই অযোগ্য হতেন, তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হতো।

আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন,বেগম জিয়ার পাসপোর্টে একটা জন্মতারিখ, বিয়ে রেজিস্টারে আরেকটা, ১৯৯১ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার সময় আরেকটা জন্মতারিখ, শিক্ষাগত সনদে আরেকটা তারিখ। আর সবশেষে এতদিন বলা নাই-কওয়া নাই হঠাৎ ১৯৯৫ সালে পত্রিকার পাতায় দেখলাম মান্নান ভূঁইয়া ঘোষণা করলেন বেগম খালেদা জিয়া ১৫ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেছেন। তখন থেকে সেই তারিখে তারা কেক কাটেন। একটা মানুষের কয়টা জন্মতারিখ থাকতে পারে, এরকম ঘটনা বাংলাদেশে আর কোনো মানুষের জীবনে আছে বলে আমার জানা নেই।

‘এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যে জিয়াউর রহমান ওতপ্রোতভাবে জড়িত, শুধু ক্যাপ্টেন মাজেদের জবানবন্দিতে নয়,কর্নেল ফারুকের বিদেশে টেলিভিশনে দেয়া সাক্ষাৎকারসহ তার বহু প্রমাণ আছে’ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, সবচেয়ে বড় প্রমাণ, বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের তিনি বিদেশে মিশনের চাকরি দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ক্যাপ্টেন মাজেদের ভাষ্য অনুযায়ী, যাদের বিয়েশাদি হয়নি, তাদের বান্ধবীসহ বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। এরপর সংসদে ইনডেমনেটি অধ্যাদেশ পাস করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দিয়ে বিচারের পথ রুদ্ধ করেছিল জিয়াউর রহমান।

তথ্যসচিব কামরুন নাহার, প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার, অতিরিক্ত সচিব জাহানারা পারভীন, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের মহাপরিচালক স ম গোলাম কিবরিয়া সভায় বক্তব্য রাখেন। ‘স্বাধীনতা কী করে আমাদের হলো’ প্রামাণ্যচিত্রটি এ সময় মিলনায়তনের চারটি পর্দায় প্রদর্শন করা হয়। এ সময় একটি ভাবগম্ভীর আবহ তৈরি হয়।

অনুষ্ঠান শেষে তথ্য ভবনের ১২ তলায় চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের বঙ্গবন্ধু প্রদর্শনী গ্যালারি এবং জাদুঘর ও নিচতলায় সংস্থার প্রদর্শনী এবং বিক্রয় কেন্দ্রের নামফলক উন্মোচন করেন তথ্যমন্ত্রী।

Facebook Comments