জীবন-জীবিকা চালাতেই বন্ধ পরিস্থিতি শিথিল করা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

দেশবাংলা ডেস্ক

সবাইকে মাহে রমজানের মোবারকবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার কষ্টের বিষয়টি উপলদ্ধি করেই সরকার ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যেহেতু বোরো ধান উঠেছে তাই খাবারের সেই কষ্টটা মানুষের হওয়ার কথা নয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের জীবন-জীবিকা চালাতেই বন্ধ পরিস্থিতি ক্রমশ শিথিল করা হচ্ছে। আমরা কিছু কিছু ধীরে ধীরে উন্মুক্ত করার চেষ্টা করছি। কিছু জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা যাতে মানুষ করতে পারে সেই ব্যবস্থা করছি। কারণ, এটা রোজার মাস।

রোববার প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় দেশের ৫৭টি প্রতিষ্ঠান, সংস্থা এবং ব্যক্তিবিশেষের পক্ষ থেকে প্রদান করা অনুদানের অর্থ গ্রহণকালে প্রদত্ত ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যেসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেসব নির্দেশনা দিয়েছে- পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, এক জায়গায় জটলা না করা- যাতে সংক্রমণ ছড়াতে না পারে, সকলকেই সেটা মেনে চলতে হবে।

তিনি পরিস্থিতি মোকাবিলার তাগিদ দিয়ে বলেন, অসুখ-বিসুখ হলে মনে সাহস রাখতে হবে। কেবল ডাক্তার এবং ওষুধেই রোগ ভালো হবে না। মনের জোর থেকে, আত্মবিশ্বাস থেকেও কিন্তু অনেকটা সুস্থ হওয়া যায়।

তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) সঙ্গে সংযুক্ত হন। পিএমওতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস তার পক্ষে অনুদানের চেক গ্রহণ করেন।

তিনি বলেন, নিজেকে সুরক্ষিত রেখে হাতে গ্লাভস এবং মুখে মাস্ক ব্যবহার করে পরিবারকে সহযোগিতা করলে, এতে খুব একটা ক্ষতির কারণ হবে বলে আমি মনে করি না। কিন্তু সন্তান হয়ে পিতাকে দূর করে দেয়া বা স্ত্রী হয়ে স্বামীকে দূর করে দেয়া, বা মাকে দূর করে দেয়া- এটা কখনই কল্যাণকর নয়।

তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা তথা পুলিশ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তারা লাশ দাফন, রোগী টানা থেকে শুরু করে সব ধরনের কাজই করে যাচ্ছে। তাদের সঙ্গে আমরা ছাত্রলীগের কর্মীদেরও দেখেছি। অনেক ক্ষেত্রে যেখানে লাশ দাফন করার কেউ নেই, তারা নিজেরা গিয়ে সেখানে লাশ দাফন করছে।

শেখ হাসিনা বলেন, এই যে মানবিক গুণগুলো, এটাই হচ্ছে মনুষত্ব। আর এটাই আমাদের বাঙালির সব থেকে বড় পরিচয়। এই চরিত্রটাই সবার থাকা দরকার বলে আমি মনে করি। এ সময় তিনি কর্তব্য পালন করতে গিয়ে মৃত্যুবরণকারী পুলিশ সদস্যদের রুহের মাগফিরাতও কামনা করেন।

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে দেশে যেন কোনো খাদ্য সংকট না হয়, সে জন্য তার সরকার বিশেষভাবে দৃষ্টি দিয়েছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ব্যাপক ধান উৎপাদন হয়েছে, খাদ্যের কোনো অভাব নেই এবং সরকার ব্যাপকভাবে ত্রাণ বিতরণ ও করে যাচ্ছে।

তিনি পুনরায় ফসল উৎপাদন বাড়ানোর উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেন, কারও এতটুকু জমিও যেন খালি পড়ে না থাকে, যে যা পারেন তাই উৎপাদন করবেন। যাতে আগামীতে কখনও খাবারের কোনো অভাব না হয়। কোনো ধরনের দুর্ভিক্ষ যাতে বাংলাদেশে আসতে না পারে বরং প্রয়োজনে যেন আমরা অন্যকে সহযোগিতা করতে পারি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল মুজিববর্ষ থেকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ২০২০ থেকে ২০২১ এর মধ্যেই বাংলাদেশ দারিদ্র্যমুক্ত হবে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে সেখানে একটা বিরাট ধাক্কা লেগেছে। অবশ্য আমি আশা করি এই বাধা দূর করেই আগামীতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আর বিশ্বব্যাপী যে সমস্যা সেটিও দূর হবে।

দেশবাংলাবিডি২৪/দে

Facebook Comments