১ জুলাই থেকে রাইড শেয়ারিং কোম্পানির লাইসেন্স

আগামী ১ জুলাই থেকে অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোকে লাইসেন্স প্রদান করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। এর মাধ্যমে নীতিমালা অনুমোদনের প্রায় দেড় বছর পর বৈধতা পাচ্ছে এই সেবা। বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশসহ (ডিএমপি) সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে এমন সিন্ধান্ত হয়েছে বলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
বিআরটিএর পরিচালক (প্রকৌশল) মো. লোকমান হোসেন জানিয়েছেন, আজকের বৈঠকে জুলাই থেকেই রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোকে’ লাইসেন্স দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
রাইড সেবাদাতা কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠলেও নীতিমালা না থাকায় ব্যবস্থা নিতে পারছিল না বিআরটিএ। এজন্য গতবছরের ১৫ জানুয়ারি বিআরটিএর প্রণীত রাইডশেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালা ২০১৭ অনুমোদন করে সরকার, যা ওই বছরের ৮ মার্চ থেকে কার্যকরের কথা ছিল।ওই নীতিমালায় রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান ও যানবাহনের জন্য লাইসেন্স (এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট) নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হলেও নীতিমালার শর্ত পূরণ না হওয়ায় কাউকে লাইসেন্স দেওয়া সম্ভব হয়নি।
এর মধ্যে গত ১৩ জুন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের পর্যালোচনা সভায় এবিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বিআরটিএর চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলো নীতিমালার সব শর্ত পূরণ করেছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে বিআরটিএর পরিচালক (প্রকৌশল) মো. লোকমান হোসেন বলেন, তাদের পক্ষ থেকে মোটামুটি সব শর্ত‌ই পূরণ করা হয়েছে। কিন্তু অ্যাপ থেকে ন্যাশনাল ইমারজেন্সি হেল্পলাইনে (৯৯৯) কল করার ব্যবস্থা নিয়ে একটু ঝামেলা ছিল। পুলিশের যে কাজটা করার কথা ছিল সেটা করতে পারেনি। এখন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সেটা ছাড়াই লাইসেন্স দেওয়া হবে।
জুলাইয়ের শেষ নাগাদ রাইডশেয়ারিং অ্যাপগুলোর সঙ্গে ৯৯৯ যুক্ত হবে বলে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের এএসপি মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, একেক প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ্লিকেশন একেক রকম। একারণে সমন্বয় করতে সমস্যা হচ্ছিল। আমরা সবার সঙ্গে বসে এটা ঠিক করতে কাজ করছি। এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে।কোনো নীতিমালা না থাকায় উবার-পাঠাওয়ের কারে ধর্ষণ ও হত্যা, মোটরসাইকেলে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব বরণের মতো ঘটনায় প্রতিষ্ঠানগুলো পার পেয়ে গেছে। এ প্রসঙ্গে বিআরটিএ চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান বলেন, পাঠাও ও উবার এই দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। নিবন্ধন হয়ে গেলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে ডেকে আনা হবে। সমাধান দিয়ে বিআরটিএ থেকে বের হতে হবে। বিআরটিএর রাইড শেয়ারিং সেল থেকে অ্যাপস প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম মনিটরিং করা হবে।লাইসেন্সের পর অতিরিক্ত ভাড়া, সেবার মানসহ বিভিন্ন অভিযোগ আমলে নিলে সেসব আর এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকবে না বলে জানিয়েছে বিআরটিএ।
বিআরটিএ সূত্র জানায়, যাত্রীর লোকেশন মনিটরিং ও পুলিশের সঙ্গে সমন্বয়ের শর্তসহ নীতিমালার ছয়টি বিষয় শিথিল করে নিবন্ধন দেওয়া শুরু হবে। উবার, পাঠাও, সহজ, রাইডার, আকাশ টেকনোলজি, রিং টেকনোলজিসহ ১০টি অ্যাপস রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রথমে আবেদন করেছিল।

Facebook Comments