বিপিও সামিট ২০১৯ শুরু হচ্ছে

আগামী ২১ ও ২২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে ‘বিপিও সম্মেলন বাংলাদেশ ২০১৯’।এ উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত আইসিটি টাওয়ারের তথ্য ও প্রযুক্তি অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এন এম জিয়াউল আলম। এ সময় তিনি বলেন, ‘তরুণদের কাছে দেশের প্রযুক্তি খাতকে তুলে ধরার জন্য এ আয়োজন করা হয়েছে। গত তিনবারের চেয়ে এবারের বিপিও সামিট আরো বড় পরিসরে আয়োজন করা হয়েছে। প্রযুক্তি সেক্টরে তরুণদের কাজে লাগানোর সুযোগ রয়েছে। তরুণ্যের শক্তিতে কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য কাজ করতে হবে।’
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ. বি. এম আরশাদ হোসেন বলেন, ‘সারা বিশ্বে বিপিও সেক্টরের বড় বাজার রয়েছে। বাংলাদেশও এই বিপিও সেক্টরে কাজ শুরু করেছে। এবং বেশ ভালো করছে। এবারের বিপিও সামিটের মাধ্যমে দক্ষ তরুণদেরকে খুঁজে বের করা হবে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রযুক্তি উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এটা আরো বৃদ্ধি করা হবে।’
বিপিও সামিটের বিস্তারিত তুলে ধরে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্য) সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ বলেন, ২০১৫ সালে বিপিও সেক্টর সম্পর্কে জনগণের তেমন কোনো ধারণা ছিল না। তিন বারের বিপিও সামিট আয়োজনের ফলে এখন সবাই এ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। তিনি আরো বলেন, বিপিও খাতে উন্নয়নের জন্য এ সামিট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমি আশা করি।
সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন বলেন, সব শ্রেণীর মানুষের চাকরির সুযোগ রয়েছে বিপিও সেক্টরে। আমরা এ সামিটে তা তুলে ধরার চেষ্টা করবো। বিপিও সেক্টরে দেশের যেকোনো জায়গায় বসে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। বিপিও সামিটে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দক্ষ তরুণদের এনে চাকরির দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রপ্তানি অসীম সম্ভবনা রয়েছে। এ যাত্রা এ সরকারের আমলে শুরু হয়েছে। আগে আমরা প্রযুক্তি পণ্য আমদানিকারক দেশ ছিলাম, বর্তমানে আমরা উৎপাদন ও রপ্তানি করছি।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মালিহা নার্গিস, বাক্যের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল খায়ের, সহ-সভাপতি তানভীর ইব্রাহিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানজিরুল বাশার, অর্থ সম্পাদক আমিনুল হকসহ অনেকে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হবে দুই দিনের বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০১৯। উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, দুই দিনের আয়োজনে দেশি-বিদেশি তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, সরকারের নীতিনির্ধারক, গবেষক, শিক্ষার্থী এবং বিপিও খাতের সঙ্গে জড়িতরা অংশ নেবেন। প্রযুক্তি ব্যবসা বিশেষ করে আউটসোর্সিং ব্যবসা পরিচালনা, ব্যবসার উন্নয়ন ও বিনিয়োগের আদর্শ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ব-দরবারে ইতিমধ্যে পরিচিয় পেয়েছে। এবারের আয়োজনে দেশের আউটসোর্সিং খাতকে আরো কিভাবে ভালো করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এবং সরকারের রূপকল্প- ২০২১ বাস্তবায়নে বিপিও খাতের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরা হবে। বিপিও খাতে দক্ষ ও পর্যাপ্ত জনবল তৈরিও এই সামিটের অন্যতম লক্ষ্য।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এবারের আয়োজনে আউটসোর্সিং সেবা, পরবর্তী প্রজন্মের ধারণাগুলো প্রদর্শন করা হবে। সময়ের আলোচিত সেবা বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। বিপিও খাতে ২০২১ সালের মধ্যে ১ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি লক্ষ্যে এ আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করেন আয়োজকরা।
এবারের আয়োজনে ৪০ জন স্থানীয় স্পিকার, ২০ জন আন্তর্জাতিক স্পিকার অংশগ্রহণ করবেন। এবারের বিপিও সামিটে ১৩টি সেমিনার ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। দুই দিনের মূল্য আয়োজনের আগে ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্টিবেশন কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।
সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগে’র আওতাধীন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য) এর আয়োজনে এই সামিট অনুষ্ঠিত হবে।আয়োজনে অংশীদার হিসেবে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজি, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) ও বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশন (বিএমপিআইএ) ইত্যাদি।

Facebook Comments