ভোটের’ জেরে ৪ সন্তানের জননীকে গণধর্ষণ

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলী ইউনিয়নের চরবাগ্গা গ্রামে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে চার সন্তানের জননীকে (৩২) গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। বিরোধী একটি দলকে ভোট দেওয়ায় বর্বরোচিত এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধর্ষিতার স্বামী অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্ত নয় জনকে আসামি করে চর জব্বার থানায় ইতোমধ্যে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের হয়েছে।
সোমবার (৩১ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ১১টার দিকে ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মঙ্গলবার (১ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টায় চর জব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ভিকটিমের স্বামী স্থানীয় সোহেলসহ নয় জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।
ওই গৃহবধূর স্বামী এবং মামলার বাদী সোমবার (৩১ ডিসেম্বর) সংবাদ মাধ্যমকে জানান, একটি বিরোধী দলের প্রতীকে ভোট দেওয়ার কারণে তার স্ত্রীর ওপর এই পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। সন্ত্রাসীরা ভোটকেন্দ্রেই দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল।
মঙ্গলবার (১ জানুয়ারি) তিনি বলেন, রোববার দুপুরে চরজুবলী ১৪নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে যায় আমার স্ত্রী। ফেরার পথে স্থানীয় সন্ত্রাসী সোহেলের সঙ্গে তার বাক-বিতণ্ডা ঘটে এবং সে বাড়িতে চলে আসে। এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে সোহেল তার সহযোগীদের নিয়ে রাতে আমাদের ঘরে হামলা চালিয়ে আমার স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে।
নির্যাতিত গৃহবধূর ভাষ্যে, ভোটের দিন (রোববার, ৩০ ডিসেম্বর) রাত ১২টার দিকে তাদের ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে সোহেল ও তার সহযোগী চৌধুরী, সহেল, আনছার মাঝির জামাই, বেচু, হেঞ্জু, সোহাগসহ ৯ জন। সন্ত্রাসীরা ঘর ভাঙচুর করে গৃহবধূর স্বামী ও ছেলে-মেয়েদের বেঁধে মারধর করে। এরপর তাকে (ভিকটিম) উঠানে নিয়ে যায়। পরে কাপড় দিয়ে গৃহবধূকে বেঁধে তাকে গণধর্ষণ করে সন্ত্রাসীরা।
পাশবিক লালসা চরিতার্থ করার পর গৃহবধূকে কুড়াল ও লাঠি দিয়ে বেদম পিটিয়ে জখমও করে সন্ত্রাসীরা। এরপর তাকে পুকুর ঘাটে নিয়ে জবাই করার চেষ্টা করলে ওই গৃহবধূ সন্তানদের কথা বলে প্রাণ ভিক্ষা চান। এসময় চিৎকার-চেঁচামেচিতে স্থানীয়রা ছুটে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
সন্ত্রাসীরা সবাই রুহুল আমিন মেম্বারের (চর জুবিলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য) অনুসারী বলেও অভিযোগ করেন গৃহবধূ।
সোমবার সকালে গ্রামবাসী ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আব্দুল আজিম জানান, প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। গৃহবধূর শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গাইনি বিভাগের তত্ত্বাবধানে ধর্ষিতার চিকিৎসা চলছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিস্তারিত বলা যাবে।

Facebook Comments