সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা ট্রাম্পের

সিরিয়া থেকে দ্রুত মার্কিন বাহিনীকে পুরোপুরি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার টুইটারে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, আমরা সিরিয়ায় আইএস-কে পরাজিত করেছি। ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সিতে শুধু আইএস-কে হটানোর জন্যই তাদের সেখানে (সিরিয়া) রাখা হয়েছিল।
টুইটারে দেওয়া আরেক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, আইএসের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জয়লাভের পর এখন আমাদের মহান তরুণদের বাড়িতে নিয়ে আসার সময় হয়েছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর ও প্রশাসনিক সূত্র সিএনএন-কে জানিয়েছে, সেনাদের সিরিয়া থেকে ফেরানোর পরিকল্পনা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ট্রাম্পের ঘোষণার ফলে সিরিয়া থেকে মার্কিন বাহিনীর দুই হাজার সদস্যকে সরিয়ে নেওয়া হবে। তবে এই পদক্ষেপ খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্টের নিজস্ব বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়নের বিপরীত। এমনকি এ ঘোষণায় খোদ ট্রাম্পের নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির অনেক সিনিয়র সদস্য একইসঙ্গে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেনা প্রত্যাহারের পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা এখনও চূড়ান্ত নয়। তবে ২০১৯ সালের মধ্য জানুয়ারি নাগাদ মার্কিন বাহিনীকে সিরিয়া থেকে ফেরানো হবে।
সিরিয়ায় মোটা দাগে আইএসের পতন হলেও জঙ্গিগোষ্ঠীটির অস্তিত্ব পুরোপুরি বিলীন হয়ে যায়নি। দেশটির কিছু কিছু স্থানে এখনও তাদের উপস্থিতি রয়েছে। ফলে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা চাইছিলেন, আইএসের পুনরুত্থান না ঘটার বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত মার্কিন সেনারা সেখানে অবস্থান করুক। তবে ট্রাম্প জোরালোভাবে তা নাকচ করে দিয়েছেন।
বরাবরই সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনাদের ফিরিয়ে আনার পক্ষপাতী ট্রাম্প। ২০১৮ সালের এপ্রিলে খোলাখুলিভাবে সৌদি আরবের কাছে সিরিয়া যুদ্ধের সামরিক ব্যয় দাবি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেছেন, সৌদি আরব যদি সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি অব্যাহত দেখতে চায় তাহলে তাদের ওয়াশিংটনকে অর্থ পরিশোধ করতে হবে।
সে সময়ই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, আমরা আইএস-কে পরাজিত করার কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছি। শিগগিরই অন্যদের সঙ্গে সমন্বয়ের ব্যাপারে একটি নতুন সংকল্পে আসবো। সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সৌদি আরব খুবই আগ্রহী। আমি তাদের বলে দিয়েছি যে, আপনারা চাইছেন যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় অবস্থান করুক। তাহলে আপনারাই হয়তো এর জন্য অর্থ পরিশোধ করতে যাচ্ছেন।
এমন সময়ে ট্রাম্প সিরিয়া থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহরের ঘোষণা দিলেন যখন রাশিয়ার সহযোগিতায় সিরিয়ায় নিজের অবস্থান সুসংহত করছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। এরইমধ্যে দেশটির বেশিরভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আসাদ বাহিনী।
উল্লেখ্য, সিরিয়া ৮ বছরের গৃহযুদ্ধে লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি এক কোটিরও বেশি মানুষকে বাস্তচ্যুত হতে হয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ৬ লাখ মানুষ বিদেশে শরণার্থী হতে বাধ্য হয়েছে।

Facebook Comments