ওয়ালটন ঢাকার ক্রিকেটে পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিং

বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস এসোসিয়েশনের আয়োজনে ঢাকার ক্রিকেটে পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিং বাস্তবতা ও সমাধান-শীর্ষক সেমিনার বুধবার বিওএ ভবনে অনুষ্ঠিত হয়।বিএসজেএর সহ-সভাপতি তারেক মাহমুদের সঞ্চালনায় প্রাণবন্ত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএসজেএর সভাপতি মোতাহের হোসেন মাসুম ও সাধারণ সম্পাদক রায়হান আল মুঘনি।শুরুতে ঢাকার ক্রিকেট নিয়ে বিএসজেএর পর্যবেক্ষণ পাঠ করেন আরিফুল ইসলাম রনি। তার পাঠে উঠে আসে ঢাকার ক্রিকেটের বর্তমান চিত্র। বিএসজেএ মনে করে,ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট একসময় ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রাণ।কিন্তু বাস্তবতা বলছে,সেই প্রাণের এখন যায় যায় অবস্থা ‍কিছু আত্মঘাতী পদক্ষেপ,বিসিবির ভোট ও কাউন্সিলরশিপের রাজনীতিকে কেন্দ্র করে প্রভাব বিস্তারের থাবায় ঢাকায় ক্রিকেটের প্রথম,দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ লিগ এখন সংকটাপন্ন।বিএসজের দাবি,ঘরোয়া ক্রিকেটের পাতানো ম্যাচ ও পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিং এই মুহুর্তে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ক্ষত।এখানে ব্যাট-বলের কীর্তি নয়,গুটি কয়েক ক্লাব কর্মকর্তার পেশী শক্তিই এখানে আসল।অনিয়মই হয়ে উঠেছে নিয়ম আর অনিয়মগুলো হয়ে উঠেছে অবিচ্ছেদ্দ অংশ।সেমিনারে ঢাকার ক্রিকেট নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ উঠে।এর মধ্যে বক্তরা সবথেকে বেশি আলোচনা করেন কর্তৃত্ব তুষ্ট আম্পায়ারিং নিয়ে।এর পিছনে ক্লাব কর্মকর্তাদের যেকোনো মূল্যে জিততে চাই- মানসিকতা, বিসিবির কাউন্সিলরশিপ রাজনীতি,অদক্ষ আম্পায়ারিং,টিভিতে সম্প্রচার না করার স্বদিচ্ছা গুলো উঠে আসে।ক্লাব ক্রিকেটের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেন ইয়াং পেগাসাসের মুখপাত্র সৈয়দ আলী আসাফ,সচরাচর ম্যাচের আগের দিন যেকোনো ক্লাব, খেলোয়াড় প্রতিপক্ষকে নিয়ে গবেষণা করে।ওই ক্লাবের কতজন স্পিনার,পেসার কিংবা কতজন ব্যাটসম্যান আছে,এগুলো নিয়ে পরিকল্পনা করে।কিন্তু এখন ম্যাচের আগে খেলোয়াড়রা চিন্তা করে পরদিন মাঠের আম্পায়ার কারা?তার মতে,পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিংয়ের শুরু হয় যখন ক্লাব গুলোর অবনবন কিংবা উন্নিতর সময় আসে।কলাবাগানের ক্রিকেট সেক্রেটারি রিয়াজ আহমেদ বাবুর অভিযোগ,ম্যাচ শেষে অধিনায়ক কিংবা ম্যানেজার যে বক্তব্য থাকে তা আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সিসিডিএম পর্যন্ত পৌঁছায় না। আম্পায়ারদের দিকে আঙুল তুলে তিনি বলেন, আম্পায়াররা পেইড আম্পায়ারিং করে থাকেন।এসব দুষ্ট আম্পায়ারদের পেছনে বিসিবির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।একই আম্পায়ার বারবার একই দলের বিপক্ষে আম্পায়ারিং করছে।ফলে মাঠের ফলেও পরিবর্তন হচ্ছে না। পায়ে লাগলেই আউট, ওয়াইড হওয়া বলে কট বিহাইন্ড দিচ্ছে।কোনো কোনো আম্পায়াররা মাঠে নেমেই বলে দেন ১২টার ভেতর ম্যাচ শেষ করতে হবে।এসব সমাধানের জন্য ক্লাব অফিসিয়ালদের মানসিকতা পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।তার মতে অনেক খেলোয়াড় থাকলেও ভালোমানের খেলোয়াড় পাওয়া যাচ্ছে না।ফলে ভবিষ্যতে ক্ষতির মুখে পড়বে বাংলাদেশ জাতীয় দল।বিএসজেএর সাবেক সাধারণ সম্পাদক জালাল আহমেদ চৌধুরী বলেন,যদি ঢাকার ক্লাবগুলো বিসিবির কাউন্সিলরশিপ পায় তাহলে কেন চট্টগ্রামের ক্লাবগুলো বিসিবির কাউন্সিলরশিপ পাবে না।তার আপত্তি,কেন বিসিবি শুধু ঢাকা কেন্দ্রিক হবে?পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিং রোধে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপহীন দক্ষ,স্বচ্ছ আম্পায়ারিং ব্যবস্থা প্রচলিত করার পরামর্শ তার।

Facebook Comments