একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক, ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা তোয়াব খানের তৃতীয় জানাজা গুলশান কেন্দ্রীয় মসজিদে (আজাদ মসজিদ) অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর তাকে বনানীর কবরস্থানে মেয়ে এশা খানের কবরে দাফন করা হয়েছে।
সোমবার (৩ অক্টোবর) আজাদ মসজিদে তৃতীয় জানাজার নামাজের আগে তোয়াব খানের ছোট ভাই ওবায়দুল কবির খান তার জন্য ক্ষমা ও আত্মার মাগফিরাতের জন্য দোয়া চান।
আগামী বুধবার পরিবারের উদ্যোগে ওবায়দুল কবিরের বাসায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি। এ সময় দৈনিক বাংলা’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শরিফুজ্জামান পিন্টুসহ প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
গত শনিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন প্রথিতযশা সাংবাদিক তোয়াব খান। সোমবার সকালে দৈনিক বাংলা প্রাঙ্গণে প্রথম জানাজা, জাতীয় প্রেসক্লাবে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তথ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, সাংবাদিক, সাধারণ মানুষ তাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অগ্রজ এ সাংবাদিককে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
২০১৬ সালে একুশে পদক পাওয়া তোয়াব খানের জন্ম ১৯৩৪ সালের ২৪ এপ্রিল, সাতক্ষীরা জেলার রসুলপুর গ্রামে। তার সাংবাদিকতা জীবনের শুরু ১৯৫৩ সালে সাপ্তাহিক জনতার মাধ্যমে। দেশ স্বাধীনের পর দৈনিক পাকিস্তান থেকে বদলে যাওয়া দৈনিক বাংলার প্রথম সম্পাদক ছিলেন তিনি।
এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ এবং প্রথম অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের প্রেস সচিবের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তথ্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের শীর্ষ পদে দায়িত্ব পালন শেষে এরশাদ সরকারের পতনের পর আবারও ১০ মাসের জন্য দৈনিক বাংলার সম্পাদক হন তোয়াব খান।
এরপর ১৯৯৩ সালে দৈনিক জনকণ্ঠের জন্মলগ্ন থেকে গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত পত্রিকাটির উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন তিনি। চলতি বছরের ৪ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি নিউজ বাংলা এবং নতুন আঙ্গিক ও ব্যবস্থাপনায় প্রকাশিত দৈনিক বাংলার সম্পাদকের দায়িত্ব নেন।
দৈনিক বাংলার প্রয়াত সম্পাদক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত বর্ষীয়ান সাংবাদিক তোয়াব খানের স্মৃতিতে ‘তোয়াব খান স্মৃতি পুরস্কার’ ঘোষণা করা হয়েছে। জাতীয় প্রেসক্লাবে সোমবার তোয়াব খানের দ্বিতীয় জানাজায় অংশ নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এ ঘোষণা দেন। সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য এই পুরষ্কার দেওয়া হবে।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, তোয়াব খানের স্মৃতি ধরে রাখতে দৈনিক বাংলার পক্ষ থেকে ‘তোয়াব খান স্মৃতি পুরস্কার’ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। প্রতি বছর এটি দেওয়া হবে। পাশাপাশি, ১ অক্টোবর থেকে সপ্তাহব্যাপী নিউজবাংলা ও দৈনিকবাংলার তরফ থেকে এক সপ্তাহব্যাপী শোক কর্মসূচি পালন করা হবে।