দেশে ৩২ হাজারেরও বেশি মণ্ডপে দুর্গাপূজা

এবার সারাদেশে ৩২ হাজার ১৬৮টি মণ্ডপে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উদযাপন হবে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরে মণ্ডপের সংখ্যা ২৪১টি। সারাদেশে মণ্ডপের সংখ্যার হিসাবে এবার গেলবারের চেয়ে বেড়েছে ৫০টি। গত বছর সারাদেশে দুর্গাপূজার সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ১১৮টি।

শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় পরিষদের সভাপতি জে. এল ভৌমিক এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘গত বছরের সহিংসতার কথা মাথায় রেখে এ বছর সরকার চাচ্ছে কোনও অবস্থাতেই যেন কোনও অঘটন না ঘটে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা গত বছরের তুলনায় এ বছর অনেক বেশি সক্রিয়। আমরা মনে করি, আমাদের ৩২ হাজার ১৬৮টি মন্দির সুরক্ষা দেওয়া খুব কঠিন। তাই আমরা এবছর প্রত্যেক মন্দিরে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করছি, যারা রাতেও পাহারা দেবে।’

জে এল ভৌমিক বলেন, ‘গত বছর পূজার সময়ের হামলাগুলোর কোনও বিচার হয়নি। আমাদের দাবি, এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হোক। আমরা সরকারের ওপর আস্থা রাখতে চাই। এ বছরের পূজাও সম্পূর্ণরূপে শঙ্কামুক্ত নয়৷ তবে আমরা সচেতন রয়েছি।’

সভায় জে. এল ভৌমিক আগামী নির্বাচনের আগেই ধর্মীয় সংখ্যালঘু সুরক্ষায় আইন প্রণয়ন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই বার বার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ইশতেহারে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইনের কথা বলা হয়েছে। আগামী নির্বাচনের আগেই এটা করতে হবে। আমরা বলেছি এমন একটি আইন করতে হবে, যেমন এসিড নিক্ষেপ হতো বাংলাদেশে; সেখানে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করে স্পেশাল আইন করার ফলে কিন্তু এটা একেবারেই কমে গেছে। আমাদের জন্যও এমন একটি আইন করতে হবে যারা অপরাধী তাদের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করতে হবে এবং স্পেশাল আদালতে কম সময়ের মধ্যে বিচার করতে হবে।’

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ জানায়, ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে পিতৃপক্ষের সমাপ্তিতে দেবীপক্ষের শুভ সূচনায় ধ্বনিত হবে আনন্দময়ীর আগমনী বার্তা। ১ অক্টোবর শনিবার ষষ্ঠী তিথিতে দেবীর আমন্ত্রণের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে ৫ অক্টোবর বুধবার দশমী তিথিতে প্রতিমা নিরঞ্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। করোনা মহামারির কারণে গত দু বছর শারদীয় দুর্গোৎসব পালনে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে স্বাত্ত্বিক পূজায় সীমাবদ্ধ রাখতে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল।

পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার লিখিত বক্তব্যে জানান, গত বছর সারাদেশে দুর্গাপূজার সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ১১৮টি। এবার এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ১৬৮টি। যা গত বছরের চাইতে ৫০টি বেশি। ঢাকা মহানগরে পূজার সংখ্যা ২৪১টি, যা গত বছরের থেকে ৬টি বেশি।

মতবিনিময় সভায় তিনটি বিষয়ের প্রতি সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানানো হয়। সেগুলো হচ্ছে- দুর্গাপূজা চলাকালীন কোনও ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি না দেওয়া; দুর্গাপূজাসহ অন্যান্য প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় স্কুল, কলেজ, পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে বিভিন্ন বিভাগে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না করা; দুর্গাপূজাসহ অন্যান্য প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না করা।

Facebook Comments