প্রেসক্লাবে নিজের শরীরে আগুন দিলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা

জাতীয় প্রেসক্লাবে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গাজী আনিস নিজের শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। এ সময় তার শরীরের বেশ কিছু অংশ পুড়ে যায়।

সোমবার (৪ জুলাই) বিকালে এ ঘটনা ঘটে।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মওদুদ হাওলাদার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ করেই গাজী আনিস নিজের গায়ে আগুন জ্বালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিকাল ৫টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে পুলিশের সহযোগিতায় দ্রুত তাকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়।

আনিসের ঘনিষ্ঠজন মোহাম্মদ আলী জানান, আনিস একজন ব্যবসায়ী। পাওনা টাকা না পেয়ে তিনি গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। দুই মাস আগেও তিনি পাওনা টাকার দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছিলেন। এরপর বিভিন্ন জায়গায় গেলেও সহায়তা না পেয়ে আজ তিনি এ ঘটনা ঘটান।

তিনি জানান, কাজী আনিস কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পান্টি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ঠিকাদারি ব্যবসা করেন।

মোহাম্মদ আলী আরও জানান, আনিস হেনোলাক্স কোম্পানির কাছে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা পাবে। ওই কোম্পানি পাওনা টাকা দিচ্ছে না। এ নিয়ে এর আগেও মানববন্ধন করেছে, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তাই আজ গায়ে আগুন দিয়েছে।

শাহবাগ থানার এসআই গোলাম হোসেন বলেন, ‘প্রথমিকভাবে আমরা জানতে পারছি, এই আত্মাহত্যা চেষ্টাকারী ব্যক্তির নাম গাজী আনিস। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী এলাকায়। হ্যানোলাক্স কোম্পানির কাছে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা পান তিনি। দীর্ঘদিন ধরে এই টাকা না দেওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মাহত্যার চেষ্টা করেন তিনি।

আনিস এর ভাই গাজী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কিছু সময়ের আগে শুনছি।’ হ্যানোলাক্স কোম্পানির কাছে টাকা পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হ্যা, আমার ভাই হ্যানোলাক্স কোম্পানির কাছে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা পাবে। এটা সত্যি। দীর্ঘ দিন ধরে সে টাকা ওঠানোর চেষ্টা করছে।’

ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানান, তার মুখমণ্ডলসহ শরীরের বেশিরভাগ দগ্ধ হয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে।

ওসি মওদুদ হাওলাদার বলেন, ‘ওই যুবক নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। কী কারণে তিনি শরীরে আগুন ধরিয়েছেন তা আমরা খতিয়ে দেখছি।’

গত ২৯ মে গাজী আনিস জাতীয় প্রেসক্লাবে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালে হেনোলাক্স গ্রুপের কর্ণধার মো. নুরুল আমিন এবং তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সেই সূত্রেই ২০১৮ সালে তিনি এই টাকা হেনোলাক্স গ্রুপে বিনিয়োগ করেন।

Facebook Comments