নুসরাত হত্যাকাণ্ড অর্থের যোগানদাতাদের খুঁজছে সিআইডি

ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির হত্যাকাণ্ডে অর্থের যোগানদাতাদের খুঁজছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এরইমধ্যে ওই ঘটনায় অর্থ লেনদেনে বেশ কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে বলেও জানা গেছে।সম্প্রতি এ সংক্রান্ত সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিষয়টি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
হত্যাকাণ্ড ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে কিংবা ঘটনা ধামাচাপা দিতে কোনো অবৈধ লেনদেন হয়েছে কিনা, কিংবা কে বা কারা এসব লেনদেনের সঙ্গে জড়িত সেসব খুঁজে বের করতে কাজ শুরু করছে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট।
নুসরাতের যৌন নিপীড়নের মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা গ্রেফতার হওয়ার পর তার মুক্তি দাবিতে মাঠে নেমেছিলেন অনুসারীরা। নুসরাত হত্যাকাণ্ডে অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই ঘটনায় সত্যিকার অর্থে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন ছিল কিনা তা যাচাই করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি। একইসঙ্গে অর্থের উৎস কিংবা যোগানদাতা থাকলে তার খোঁজও করা হবে।সিআইডির সিনিয়র সহকারী বিশেষ পুলিশ সুপার শারমিন জাহান এ সংক্রান্ত তদন্ত বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
৬ এপ্রিল (শনিবার) সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যায় নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার এক ছাত্রী সহপাঠী নিশাতকে ছাদের উপর কেউ মারধর করেছে, এমন সংবাদ দিলে সে (নুসরাত) ওই ভবনের তৃতীয় তলায় যায়। সেখানে মুখোশপরা ৪/৫ জন ছাত্রী নুসরাতকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়।
অস্বীকৃতি জানালে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল (সোমবার) রাতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন অগ্নিদগ্ধ রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।
ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত এজহারের ৮ জন গ্রেফতারসহ মোট ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ৪ জন। ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদ্রাসা কমিটির সহ-সভাপতি রুহুল আমিনকেও আটক করেছে পিবিআই। রুহুল আমিন নুসরাতের প্রতিষ্ঠান সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি। এই কমিটি অবশ্য শুক্রবারই বাতিল হয়ে গেছে।

Facebook Comments