ইসলামের প্রতিটি বিধিবিধান অত্যন্ত সময়োপযোগী। প্রকৃতি আল্লাহর দান। শীত, বসন্ত, হেমন্ত সবই আল্লাহতায়ালা মানুষের কল্যাণের জন্যই দিয়েছেন। এখন শীতকাল শুরু হয়েছে, যা প্রাকৃতিক নিয়ামতের অন্যতম অংশ। তবে এই শীতকে যেমন উপভোগ করা হয় তেমনি শীতের তীব্রতায় কষ্টে জর্জরিত হয় অনেকে।
হজরত ওমর (রা.) বলেন, শীতকাল হলো ইবাদতকারীদের জন্য গনিমতস্বরূপ। যা কোনো রক্তপাত কিংবা চেষ্টা ও কষ্ট ছাড়াই অর্জিত হয়। সবাই কোনো ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই এ গনিমত স্বতঃস্ফূর্তভাবে লাভ করে এবং কোনো প্রচেষ্টা বা পরিশ্রম ছাড়াই তা ভোগ করে।
এর বর্ণনায় বলা হয়েছে, শীতের রাত দীর্ঘ হওয়ায় মুমিন রাত্রিকালীন নফল নামাজ আদায় করতে পারেন এবং দিন ছোট হওয়ায় রোজা রাখতে পারে।
এ সম্পর্কে হাদিসে আছে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি কি তোমাদের জানাব না, কিসে তোমাদের পাপ মোচন করবে? এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করবে? সাহাবায়ে কিরাম বললেন, অবশ্যই! হে আল্লাহর রাসুল (সা.)। তিনি বললেন, শীতের কষ্ট সত্ত্বেও ঠিকভাবে অজু করা। (মুসলিম: ২৫১; তাফসিরে কুরতুবি)।
শীতের সময় অজুর ক্ষেত্রে পা না ধুয়ে মোজার ওপর মাসেহ করার বিধান রয়েছে। তবে প্রথমে অজু করে মোজা পরতে হবে। আর মুসাফির ব্যক্তি তিন দিন তিন রাত (৭২ ঘণ্টা) পর্যন্ত মাসেহ করে যেতে পারবেন এবং ‘মুকিম’ (স্ববাসে অবস্থানরত) ব্যক্তি এক দিন এক রাত (২৪ ঘণ্টা) মাসেহ করতে পারবেন। এ সময়সীমার পর অজুর প্রয়োজন হলে মোজা খুলে পা ধুয়ে অজু করতে হবে।
মোজার ওপর মাসেহ বৈধ হওয়ার শর্তগুলো হলো- পবিত্র হয়ে মোজা পরা। অর্থাৎ অজু করে পা ধোয়ার পর মোজা পরা। -সহিহ বোখারি: ১৯৯। এছাড়া মোজা দিয়ে পায়ের টাখনু ঢেকে থাকতে হবে। -সহিহ মুসলিম: ৩৫৪। মোজা ছেঁড়াফাটা হলে পায়ের ছোট আঙুলের তিন আঙুল পরিমাণের কম ছেঁড়াফাটা থাকতে হবে। -সুনানে আবু দাউদ: ২৪২০। উভয় মোজা বাঁধা ছাড়া পায়ে লেগে থাকা এবং তা ধারাবাহিক চলার উপযোগী হওয়া।