এক যুগেই বদলে দিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা

তাসনিম তাপসী

করোনাভাইরাস মহামারিতে গত এক বছরে বিশ্ব ব্যবস্থা টালমাটাল। করোনায় প্রভাবিত উন্নয়ন, অর্থনীতি এমনকি রাজনৈতিক পরিস্থিতিও। অথচ করোনার মধ্যেও রেকর্ড গড়ছে বাংলাদেশ। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও দারুণ গতিতে আসছে রেমিট্যান্স। আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় এখন রেমিট্যান্স প্রবাহ সবচেয়ে বেশি। আনন্দের বার্তা আসছে রেজার্ভের ক্ষেত্রেও।

এ দুটি সূচক নিঃসন্দেহে দেশের অর্থনীতির উন্নততর অবস্থান নির্দেশ করে। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও এগিয়ে যাওয়ার গল্প বুনছে বাংলাদেশ। আর এগিয়ে যাওয়ার গল্পের কারিগর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকেই মানছেন বিশ্লেষকরা।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগের জোট সরকারের যুগপূর্তি । ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি সরকার গঠন করে টানা তিন মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছে আওয়ামী লীগ। ৬ জানুয়ারি পূরণ হলো শেখ হাসিনার নেতৃত্বের টানা এক যুগ।

বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রার সকল আলোচনার কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই রাখছেন অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা।

চ্যালেঞ্জ নিয়েই যেমন বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পন্ন করে চলছেন, তেমনি ছিটমহল সমস্যার সমাধান, সমুদ্র সীমানার বিরোধেরও নিষ্পত্তি টেনেছেন শেখ হাসিনা।

শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্যে বাংলাদেশ আজ দক্ষিণ এশিয়ার যে কোনো দেশকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন। সামাজিক নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিয়েও এমন সূচক এখন উদাহরণ হয়ে আসছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময় চুক্তিকে অন্যতম কূটনৈতিক সাফল্য মনে করেন বিশ্লেষকরা

চলতি মাসেই স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে স্প্যান বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অহেতুক অভিযোগ তুলে এ প্রকল্প থেকে পিছু হটে যাওয়া বিশ্ব ব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে গোটা দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্ব নেতারা যেমন বাংলাদেশকে বিশেষ স্বীকৃতি দিচ্ছেন, তেমনি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলা এবং রোহিঙ্গা সংকট ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রশ্নেও শেখ হাসিনাকে আপসহীন নেতা হিসেবে মূল্যায়ন করছেন আন্তর্জাতিক রাজনীতিকরা।

২০০৮ সালের শেষ দিকে নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত হয় মহাজোট সরকার। এই সরকার দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জয়ী হয়ে। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসায় বড় বড় অবকাঠামোসহ নানামুখী উন্নয়ন কর্মকাকান্ড – সচল রাখা সম্ভব হয়। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এই সরকারের সুদীর্ঘ ৯ বছরের অভিযাত্রা।

২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার ‘দিন বদলের সনদ’-এ বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো একটি উন্নয়নের ভবিষ্যৎ রূপরেখা (ভিশন-২০২১) নির্দিষ্ট করা হয়েছিল। ওই ইশতেহারে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের যে বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছিল সেগুলোর সঠিক বাস্তবায়নের কারণেই এলডিসিভুক্ত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথ প্রশস্ত হয়। সংশ্লিষ্ট বাধাগুলো দূর করে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের অঙ্গীকার, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ঘাটতি মোকাবিলা, অবকাঠামো উন্নয়ন, উপজেলা ও গ্রাম পর্যন্ত তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার, বন্দর উন্নয়ন, সড়ক, রেল ও নৌ যোগাযোগের প্রসার, বিনিয়োগ পরিবেশের উন্নয়নের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি ঘটিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন প্রক্রিয়া চালুর অঙ্গীকার করা হয় ওই ইশতেহারে। এছাড়াও দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল করা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বাড়িয়ে মানবসম্পদের উন্নয়ন করে কর্মসংস্থান বাড়ানো, দ্রুত দারিদ্র্য নিরসন, কৃষিতে ভর্তুকি দিয়ে তার প্রবৃদ্ধি বাড়ানো, সামাজিক সংরক্ষণমূলক কর্মসূচির প্রসার; চর, হাওর ও উপকূলে দুঃখী মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারগুলোকে শক্তিশালী করা, আঞ্চলিক সহযোগিতার ব্যাপ্তি বাড়ানোর মতো সুদূরপ্রসারী সব অঙ্গীকার করা হয়।এই ৯ বছরে আর্থসামাজিক উন্নয়নের সূচকসমূহের যে বিস্ময়কর অর্জন ঘটেছে।

শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন সাফল্যের চিত্র=

১) পদ্মা সেতু নির্মান (নির্মানাধীন),
২) সমুদ্র সীমানা বিজয়,
৩) শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি,
৪) ফ্লাইওভার নির্মান,
৫) জেলেদের খাদ্য সহায়তা প্রদান,
৬) দরিদ্রতার হার নিম্ন পর্যায়,
৭) যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারদের বিচার,
৮) বয়স্কভাতা প্রদান,
৯) বিনামূল্যে এক কোটি শিক্ষার্থীদের হাতে বই বিতরণ,
১০) মাতৃকালীন ভাতা প্রদান,
১১) কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্হ্য সেবা প্রদান,
১২) বিধবা ভাতা প্রদান,
১৩) দেশের রপ্তানী আয় বৃদ্ধি,
১৪) মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি,
১৫) গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদান,
১৬) বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয় করণ,
১৭) প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান,
১৮) মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা প্রদান,
১৯) প্রতিটি ইউনিয়নে ডিজিটাল তথ্য সেবা কেন্দ্র স্থাপন,
২০) বিভিন্ন জেলায় বিনোদন কেন্দ্র নির্মান,
২১) দেশের বিভিন্ন জেলায় শিল্প পার্ক নির্মান,
২২) দেশের বিভিন্ন স্থানে ইকোনোমিক জোন নির্মান,
২৩) গ্রামীন রাস্তা-ঘাট ও কালভার্ট নির্মান,
২৪) মোবাইল ও ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি,
২৫) একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প,
২৬) কর্মসংস্হান বৃদ্ধি,
২৭) কৃষিতে সফলতা,
২৮) জঙ্গী ও সন্ত্রাস দমনে সফলতা,
২৯) এশিয়ান হাইওয়ে রোড প্রকল্প,
৩০) বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি,
৩১) রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চলমান,
৩২) নারীর ক্ষমতায়ন,
৩৩) বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার,
৩৪) মাতৃত্বকালীন ছুটি বৃদ্ধি।
৩৫) রুপপুর পারমানবিক বিদুৎ কেন্দ্র।
৩৬) মাতার বাড়ি বিদুৎ কেন্দ্র ।
৩৭) মেট্রোরেল নির্মাণ (নির্মানাধীন)
৩৮) মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ ।
৩৯) নিজস্ব স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু -১ তৈরি!

Facebook Comments