সিলেট শহর এখনও বিদ্যুৎবিহীন

আগুনে পুড়ে যাওয়া পিজিসিবির উপকেন্দ্র থেকে বিকেল নাগাদ ছাতক, বিয়ানিবাজার আর সুনামগঞ্জে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা গেলেও সিলেট শহর এখনও বিদ্যুৎবিহীন। আজ রাতের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা যাবে বলে আশা করছে সঞ্চালন লাইনের দায়িত্বে থাকা পিজিসিবি আর বিতরণ লাইনের দায়িত্বে থাকা পিডিবি।

কুমারগাঁও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির (পিজিসিবি) উপকেন্দ্রে অগ্নিকান্ডে সকাল ১১টা ২ মিনিট থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অর্থাৎ ৯ ঘন্টা ধরেই বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে সিলেটবাসী।

আজ সকালে ৩৩/১১ কেভি বিদ্যুৎ সরবরাহ ট্রান্সফরমারে আগুন লেগে যায়। এই ট্রান্সফরমারটি দিয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) উপকেন্দ্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে। সেখান থেকে পিজিসিবির উপকেন্দ্রের ১৩২/৩৩ কেভি একটি ট্রান্সফরমারে আগুন লেগে যায়। সেই সময় বড় দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ওই উপকেন্দ্রের চারটি ট্রন্সফরমারে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ করে দেয় পিজিসিবি।

কুমারগাঁও উপকেন্দ্র থেকে ছাতক, সুনামগঞ্জ এবং বিয়ানীবাজার উপকেন্দ্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ফলে কুমারগাঁও বন্ধ করে দেওয়াতে ছাতক, সুনামগঞ্জ এবং বিয়ানীবাজার এলাকার সাবস্টেশনগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কুমারগাঁও উপকেন্দ্রে চারটি ১৩২/৩৩ কেভি একটি ট্রান্সফরমার রয়েছে। এর মধ্যে একটি ট্রান্সফরমার পুড়ে গেলেও বাকি তিনটি ভাল আছে বলে আপাতদৃষ্টিতে ধারণা করা হয়েছিল। সেসময় পিজিসিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, বিকেল নাগাদ বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা যাবে।

সন্ধ্যায় পিজিসিবির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াকুব এলাহী চৌধুরী জানান, আগুনের কারণে আমাদের চারটি সাবস্টেশন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বিকেল নাগাদ আমরা তিনটা চালু করতে পেরেছি। সুনামগঞ্জ, ছাতক ও বিয়ানিবাজারের বিদ্যুৎ সরবরাহের সঞ্চালন লাইন আমরা চালু কর‍তে পেরেছি। তবে আগুনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সে উপকেন্দ্রে সেটি দিয়েই সিলেট শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। সেটি এখন মেরামতের কাজ চলছে। রাতের মধ্যে ঠিক করা যাবে বলে আমরা আশা করছি। তবে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজটা তো বিতরণ কোম্পানি পিডিবির। আগুনে তাদের বিতরণ লাইনও ক্ষতিগ্রস্ত। হয়েছে।

উপকেন্দ্র এলাকার একেবারে পাশেই ছিল পিডিবি দুইটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, একটি ২২৫ মেগাওয়াট আরেকটি ২০ মেগাওয়াট। এই কেন্দ্র গুলো থেকে উৎপাদন করা বিদ্যুৎই সঞ্চালন লাইন হয়ে পিডিবি সরবরাহ করতো।

এদিকে বিতরণ লাইনের বিষয়ে পিডিবির পরিচালক (জনসংযোগ) সাইফুল হাসান চৌধুরী জানান, ১৩২ কেভি গ্রিডের আগুন ছড়িয়ে পড়ে ৩৩ কেভি বিতরণ লাইনেও। আগুনে পুড়েড়ে গেছে বিদ্যুতের তারসব আনুসাঙ্গিক যন্ত্রাংশ৷ মেরামতের কাজ চলছে। রাতের মধ্যে সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ঘটনা তদন্তে পিজিসিবির প্রধান প্রকৌশলী ইকবাল আজমের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে তারা প্রতিবেদন জমা দেবেন।

Facebook Comments