কারা ইউএনওর ওপর হামলা করেছেন খুব দ্রুত জানা যাবে

দেশবাংলা ডেস্ক

কারা দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলা করেছেন তা খুব দ্রুত জানা যাবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলা বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।

বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের সরকারি বাসভবনে সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হন ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলী। ওয়াহিদা খানমকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে।

ফরহাদ হোসেন বলেন,দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম,তিনি বিসিএস ৩১ ব্যাচের কর্মকর্তা।তিনি সেখানে সরকারি কোয়ার্টারে থাকতেন,তার বাবাও সেখানে ছিলেন।তার হাজবেন্ডও পীরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি দোতলায় থাকেন।গতকাল রাত প্রায় ৩টার দিকে দোতলার বাথরুমের ভেন্টিলেটর ভেঙে দুজন দুর্বৃত্ত ঢোকে।তাকে হাতুড়ি দিয়ে মাথার পেছনের অংশে আঘাত করে।সে গুরুতর আহত হয়।মাথা ফেটে অনেক রক্তক্ষরণ হয়।এরপর তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

প্রতিমন্ত্রী বলেন,ওয়াহিদা খানমকে আরও ভালো চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টার যোগে আমরা ঢাকা নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যে তাকে ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে বেশ সিরিয়াস পর্যায়ের রোগী।তার একটা সাইড প্যারালাইজড মনে হচ্ছে।

তিনি বলেন,আমাদের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার (এসপি) এখনও ঘোড়াঘাটের ইউএনওর বাসায় অবস্থান করছেন।আমরা কিছুক্ষণ আগে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। সেক্ষেত্রে বিষয়টি কী হয়েছে এবং এই দুর্বৃত্তরা কারা, সেই বিষয়ে এসপি সাহেব বললেন, আমরা একটু সময় পেলে আমরা খুব দ্রুত দুর্বৃত্তদের নাম ঠিকানা বের করতে পারব। আমাদের প্রচেষ্টা আছে,আমরা আশাবাদী খুব দ্রুত এটা করতে পারব।
ফরহাদ হোসেন বলেন,সেখানে (ইউএনওর বাসভবন) সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল। কিন্তু দুর্বৃত্তের মুখে মুখোশ ছিল।সেগুলো দেখে পর্যালোচনা চলছে। সেখানে পুলিশের চৌকস একটি টিম কাজ করছে। তারা আশাবাদী যে, খুব দ্রুত আমাদের জানাতে পারবেন। কারা এই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। আমরা অপেক্ষা করছি।

আমরা তাকে (ইউএনও) সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের চেষ্টা করছি।যা যা করা প্রয়োজন আমাদের পক্ষ থেকে আমরা সেটি করছি। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক হঠাৎ করে এ রকম একটি বিষয়। জানতে আমাদের একটু অপেক্ষা করতে হবে, দুর্বৃত্তরা কারা আসলে?

প্রতিমন্ত্রী বলেন,তারা কী ডাকাতির উদ্দেশে এসেছিল,নাকি উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোনো কারণে শত্রুতা তৈরি হয়ে এ রকম হয়েছিল কি না? আমি ডিসি সাহেবকে (দিনাজপুরের ডিসি) জিজ্ঞাসা করেছি, এমন কোনো কিছু হয়েছিল কি না শত্রুতাবশত। ডিসি সাহেব বলেছেন, না, আমাকে তো….। কোনো একটা কিছু হলে, নির্বাহী কর্মকর্তা ডিসি সাহেবের সঙ্গে আলোচনা করেন। কোনো একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোথাও কোনো সমস্যা হলে সেটা জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়। এ রকম কিছু তার (ওয়াহিদা খানম) পক্ষ থেকে অবহিত করা ছিল না। যার কারণে পুরোপুরি ব্যাপারটা বুঝতে আমাদের একটু অপেক্ষা করতে হবে।’

তিনি বলেন,তার পিতাও কিন্তু আহত।যদি মনে করতাম,কোনো শত্রুতাবশত তাহলে সে একা আক্রান্ত হতো। তার পিতা একজন বয়স্ক মানুষ, সেও কিন্তু আক্রান্ত হয়েছে। তার মানে হয়তো ব্যাপারটা ডাকাতির উদ্দেশে বা এ রকম কিছুও হতে পারে।

ইউএনও ওয়াহিদা খানমের একটি ছেলে সন্তান আছে।তার বয়স ৩ বছর বলেও জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী।

আমরা বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখছি। আশা করি,অল্প সময়ের মধ্যে এই জটটা খুলবে। আমরা অত্যন্ত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব’ বলেন তিনি।

পারিবারিক শত্রুতা থেকে এমনটা হতে পারে কি না- এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, পারিবারিক শত্রুতা এমন কিছু মনে হচ্ছে না।তদন্তেই সব বের হয়ে আসবে।তবে এমনও আমরা জিজ্ঞাসা করেছি, কোনো কিছু খোয়া গেছে কি না, সেই রকমও কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কোনো তদন্ত কমিটি করা হচ্ছে কি না- এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন,এ বিষয়ে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। পুলিশই এটার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সরকার নিজেই এটা তদন্ত করবে।

এই ঘটনায় মামলা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রীর পাশে থাকা জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন বলেন,এখনও মামলা হয়নি, মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।ইউএনওর পিতার জ্ঞান ফিরেছে।

Facebook Comments