ঠাকুরগাঁওয়ে গরুর খামারিরা পাচ্ছেন না ক্রেতা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :

কয়েকদিন পরেই ঈদুল আজহা। আল্লাহকে খুশি করতে তার নামে পশু কোরবানি করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। এদিকে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও ঠাকুরগাঁওয়ে কোরবানির পশুর কোনও সংকট হবে না বলছেন খামারিরা। তবে মহামারি পরিস্থিতিতে পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

করোনার এ দু:সময়ে পশু বাজারে নিতে পারবেন কিনা, বাজারে নিলেও ক্রেতা মিলবে কিনা, ক্রেতা মিললেও দাম সঠিক পাবেন কিনা এসব নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন গরু খামারিরা। আর এদিকে আবার গরুতে ল্যাম্পি স্কিন রোগের প্রকোপ চলছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ঠাকুরগাঁওয়ে জেলা-উপজেলা মিলে গরুর খামার ১১৭৮২। আর গরুর সংখ্যা ৮০ হাজার ৪৫৯। বাজারে উঠবে অনেক গরু কিন্তু গুটি রোগ এবং ল্যাম্পিং যে রোগ দেখা দিয়েছে তাতে ক্রেতা কম হতে পারে।

সরেজমিনে ২২ জুলাই বুধবার সদর পৌরসভা সত্যপীরব্রীজ সংলগ্ন মামুন ডেইরি ফার্মের সত্তাধীকারি মামুন জানান, ঈদুল আজহার মাত্র কয়েক দিন বাকি,অথচ করোনা নিয়ে তারা এখনো দুশ্চিন্তামুক্ত হতে পারেননি। মূলত কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে সারা বছর গরু লালন-পালনে তারা মোটা অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেন। তাই এখন পশু বিক্রি করতে না পারলে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়বেন খামারিরা।

একই এলাকার বাচ্চু, হাবিব বলেন, সারা বছর গরু মোটাতাজা করে কুরবানির ঈদের অপেক্ষায় থাকি। কুরবানিতে লাখ টাকায় বিক্রির আশায় ভালো ভালো খাবার খাইয়ে লালন-পালন করি। তার ভালো দাম না পাই তাহলে লোকসান হবে অনেক।

অন্যদিকে ভাউলার হাট নাপিত পাড়া গরুর খামারি মোতাহার বলেন, এবার ৫টি গরু মোটাতাজা করেছি। এত টাকা বিনিয়োগ করে যদি কুরবানির ঈদে দাম ভালো না পাই তাহলে আমাদের মতো খামারিদের দুঃখের সীমা থাকবে না। তিনি আরও বলেন, ঋণ করে কুরবানির আশায় গরু পালন করেছি। করোনার বর্তমান অবস্থায় এখন আতঙ্কের মধ্যে আছি। সারা বছর পরিশ্রম করে গরু পালন করি। কয়েক বছর ধরে ঢাকার বড় বড় ব্যবসায়ীরা আমাদের কাছ থেকে গরু কিনে অনলাইনে ছবি দিয়ে বিক্রি করে ফায়দা লুটে। তার মধ্যে এবার গো-খাদ্যের দাম অত্যধিক বেড়ে গেছে। এ কারণে গরু পালনে খরচও বেড়েছে।

খোঁচাবাড়ি বাজারে গরু কিনতে আসা ক্রেতা মোঃ মোহতাদুম ইসলাম মুকুল জানান এবার গরুতে লাম্পি স্কিন ও অন্যদিকে করোনার কারনে মানুষের হাতে নেই টাকা পয়সা অথচ খামারিরা আগের মত দাম ধরে রাখায় বাজারে তেমন ক্রেতার সমাগম হচ্ছেনা। এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কৃষিবিদ আলতাফ হোসেন বলেন, এ বছরও আমাদের দেশে যে পশু আছে তা কুরবানির জন্য যথেষ্ট। দেশের বাইরে থেকে গরু আনার কোনো প্রয়োজন নেই। গত বছর অমাদের কুরবানিযোগ্য পশু ছিল প্রায় এক লাখের ওপরে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ঠাকুরগাঁওয়ে অসংখ্য গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়ার খামারও গড়ে উঠেছে। গ্রামের বিধবা মহিলা বা সাধারণ কৃষক থেকে শুরু করে লাখ লাখ মানুষ গরু, ছাগল ও ভেড়া পালন করেন। এখন অনেক শিক্ষিত যুবক ডেইরি ফার্ম ও গরু মোটা তাজাকরণকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

দেশবাংলাবিডি২৪/ফি

Facebook Comments