করোনায় অর্থনীতি ও জীবন বাঁচাতে শেখ হাসিনার নেওয়া পদক্ষেপ

দেশবাংলা ডেস্ক

করোনা ভাইরাস মহামারি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও পদক্ষেপ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ফোর্বস ম্যাগাজিনসহ আন্তর্জাতিক মিডিয়া এবং বিশ্ব নেতাদের প্রশংসার কথা উল্লেখ করেন প্রেস সচিব।

প্রধানমন্ত্রী প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, করোনা ভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের জীবন এবং অর্থনীতিকে বাঁচাতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা হচ্ছে দুটো বিষয়। একটা হচ্ছে জীবন, আরেকটা হচ্ছে জীবিকা। তিনি সার্বক্ষণিক সব কিছুর খোঁজ-খবর রাখছেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।

অর্থনীতি ও জীবন বাঁচাতে শেখ হাসিনার নেওয়া পদক্ষেপ-

* করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। সাধারণ ছুটি কয়েক দফা বাড়িয়ে ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বলবৎ রাখা।

* দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য এইচএসসি ও সমমানের পাবলিক পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার।

* অনলাইন, টেলিভিশনের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা।

* চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনসহ করোনা যুদ্ধে ফ্রন্ট লাইন যোদ্ধাদের জন্য পিপিই-মাস্কসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী নিশ্চিত করা।

* করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ ফ্রন্টলাইন যোদ্ধাদের কেউ দায়িত্ব পালনকালে আক্রান্ত হলে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকার স্বাস্থ্যবিমা এবং মৃত্যুর ক্ষেত্রে এর পরিমাণ ৫ গুণ হিসেবে স্বাস্থ্য ও জীবনবিমা ঘোষণা। এজন্য ৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ।

* ২ হাজার ডাক্তার ও ৫ হাজার ৫৪ জন নার্স নিয়োগ। আরও ৫ হাজার স্বাস্থ্য টেকনোলজিস্ট নিয়োগ দেওয়া হবে।

* স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শের জন্য ৩টি হটলাইন (১৬২৬৩; ৩৩৩ ও ১০৬৫৫) চালু।

* করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভাগ, জেলা, উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠন।

* প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে সংযুক্ত হয়ে জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন এবং বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

* প্রধানমন্ত্রী সঙ্কট মোকাবিলায় ১ এপ্রিল ৩১টি, ১৬ এপ্রিল ১০টি, ২০ এপ্রিল ১৩টি এবং ২৭ এপ্রিল ১০টি নির্দেশনা দেন।

* ১০ টাকা কেজি চাল বিক্রি বাবদ ২৫১ কোটি টাকা, হিজড়া বেদেসহ নির্দিষ্ট কিছু সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে নগদ বিতরণ ১ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা।

* ভাতা কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধি ৮১১ কোটি টাকার, গৃহহীন মানুষের জন্য ঘর তৈরি ২ হাজার ১৩০ কোটি টাকা।

* স্নাতক ও সমমান পর্যায়ের ২০১৯ সালের ২ লাখ ৯ হাজার ৬৭৪ জন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে উপবৃত্তি বাবদ ১০২ কোটি ৭৪ লাখ ২ হাজার ৬শ টাকা এবং টিউশন ফি বাবদ ৮ কোটি ৬৬ লাখ ৪১ হাজার ২০০ টাকা বিতরণ।

* প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত করে জুলাই ২০২০ থেকে দেশের ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে স্নাতক পর্যায়ের দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তি দেওয়া হবে।

* ৫০ লাখ মানুষের জন্য রেশন কার্ড করা আছে যারা ১০ টাকায় চাল পান। নতুন আরও ৫০ লাখ রেশন কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা। এতে প্রায় ৫ কোটি মানুষ উপকৃত হবেন।

* বোরো মৌসুমে ৮ লাখ মেট্রিক টন ধান, ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল, ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আতপ এবং ৮০ হাজার মেট্রিক টন গমসহ সর্বমোট ২১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য সংগ্রহের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

* ৬৪ জেলার ত্রাণ কার্যক্রমের সমন্বয় সাধনের জন্য ৬৪ জন সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

* ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ। ২৯ মে পর্যন্ত ৭২ জন জনপ্রতিনিধিকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

* শিশু খাদ্য সহায়ক হিসেবে বরাদ্দ ২৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা এবং এ পর্যন্ত বিতরণ করা হয়েছে ১৮ কোটি ৫৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এতে উপকারভোগীর সংখ্যা ১২ লাখ ৫৯ হাজার।

* করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে রমজান উপলক্ষে কওমি মাদ্রাসাগুলোকে ১৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, মসজিদগুলোর জন্য ১২২ কোটি ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা।

* বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন, দলীয় সংসদ সদস্যদের পক্ষ থেকে সারাদেশে ৯০ লাখ ২৫ হাজার ৩২৭ পরিবারকে খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি ৮ কোটি ৬২ লাখ ৮ হাজার টাকা নগদ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ধানকাটা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ।

* বোরো ধান/চাল ক্রয়ের কার্যক্রম (অতিরিক্ত ২ লাখ টন) ৮৬০ কোটি টাকার এবং কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ ২০০ কোটি টাকা।

* ভিজিডি, ভিজিএফ, ১০ টাকায় খাদ্য সহায়তা ও অন্য সহায়তা প্রাপ্ত প্রায় ৭৬ লাখ পরিবার বাদ দিয়ে অবশিষ্ট প্রায় ৫০ লাখ করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে মুজিববর্ষ উপলক্ষে মে/২০২০ মাসে এককালীন ২৫শ টাকা হারে মোট ১২শ ৫০ কোটি টাকা নগদ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

Facebook Comments