আবরার হত্যায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি দেয়া হবে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক দেশবাংলা বিডি ২৪.কম :

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের যত ধরনের শাস্তি আছে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে। কিসের ছাত্রলীগ, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আমি কারো দাবির অপেক্ষায় তো বসে থাকিনি। শোনার সঙ্গে সঙ্গে নির্দেশ দিয়েছি, গ্রেফতার শুরু হয়েছে।
বুধবার (৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতে সরকারি সফর সম্পর্কে জানাতে সংবাদ সম্মেলন করেন।
প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই তার দুই সফরের বিষয়ে কথা শুরু করেন। এরপর শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব।
সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নটিই ছিল আবরার হত্যা নিয়ে। গত রোববার রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার কয়েকজন নেতা–কর্মী।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বুয়েটর খবর জানার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে আলামত সংগ্রহের নির্দেশ দেই। যখন পুলিশ আলামত সংগ্রহ করে নিয়ে আসবে তাদের আটকে দেয়া হলো। তিন ঘণ্টা আটকে রাখা হলো, কেন? সেটা জানা দরকার। অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল কিনা।
তিনি বলেন, আমি তো সঙ্গে সঙ্গে আইজিপিকে নির্দেশ দিয়েছি কোন রুমে কারা ছিল সবগুলোকে ধরে অ্যারেস্ট করো। যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটাবে আমি মেনে নেব না। ছাত্রলীগকে সঙ্গে সঙ্গে ডেকেছি, নির্দেশ দিয়েছি ব্যবস্থা নেয়ার।
সংবাদ সম্মেলনে আবরার হত্যা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন,কেউ যদি কোনো অপরাধ করে, তা কোন দলের কে করে, সেটা দেখি না। অপরাধী হিসেবেই চিহ্নিত করি।
আবরার হত্যাকে অমানবিক বলে অভিহিত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, একটা বাচ্চা ছেলে, ২১ বছর বয়স। তাকে কী অমানবিকভাবে হত্যা করেছে। পিটিয়ে পিটিয়ে মেরেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এই ঘটনার পরই ছাত্রলীগকে বলেছি অভিযুক্তদের বহিষ্কার করতে। তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। পুলিশকে বলেছি অপরাধীদের ধরতে। অনেকেই ধরা পড়েছে। ছাত্ররা নামার আগেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।
আবরার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন,সাধারণ পরিবারের ছেলে, এত ব্রিলিয়ান্ট একটা ছেলে। তার মায়ের কষ্ট আমি বুঝি। বাবার কষ্ট বুঝি। কারণ, আমিও হত্যার বিচার চেয়ে পাইনি। মা–বাবার হত্যার পর ৩৮ বছর আমাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কে ছাত্রদল কে ছাত্রলীগ—এ বিবেচনা করব না।
বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাইলে করুক, আমরা কেন ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করব। প্রতিটি সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা আছে ছাত্রদের। বুয়েট যদি মনে করে সেখানে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করবে; তারা করতে পারে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের নেতৃত্ব উঠে এসেছে ছাত্র রাজনীতি থেকে। আমি ছাত্র রাজনীতি করেই এখানে এসেছি। এজন্য আমরা দেশের জন্য কাজ করতে পারি।আমার নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস আছে; আমি যেটা করি জনগণের কল্যাণের জন্য করি মঙ্গলের জন্য করি।

Facebook Comments