চকবাজারের ঐতিহ্যবাহী ইফতার

রমজানে সেজে উঠেছে বাংলাদেশের চকবজার। দুপুর থেকেই দোকানিরা বৈচিত্রে ভরপুর লোভনীয় ইফতার সামগ্রী থরে থরে সাজিয়ে রাখছেন টেবিলে। বাহারি সেই ইফতার কিনতে প্রথম দিন থেকেই ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।


রমজানে সেজে উঠেছে বাংলাদেশের চকবজার। চকবাজার পুরোন ঢাকার লালবাগের একটি জনপ্রিয় বাজার। রমজান মাসে এখানে রকমারি ইফতারের পশরা বসে। কাবাবের কথা এলেই চকবাজারের নামটিও আসবে। চকবাজারের কাবাব খুব বিখ্যাত।

ঢাকার পুরানো বাজারগুলির মধ্যে চক অন্যতম। বিশ শতকের গোড়ার দিকে যেমন, এখনও তেমনি রমজানে ইফতারীর সময় চকবাজারে প্রচণ্ড ভিড় হয়। ইতিহাস থেকে জানা যায়, মুঘল আমলে চকবাজারের পত্তন হয়। মুঘল আমলে সেনাপতি মানসিংহ পূর্ববঙ্গে এসেছিলেন বিদ্রোহ দমন করতে।

১৬০২ সালে তিনি ভাওয়াল থেকে সদর দপ্তর স্থানান্তর করেছিলেন বর্তমান কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গায়। সেখানেই মুঘল দুর্গ স্থাপিত হয়েছিল। মুঘল দুর্গের পাশেই গড়ে উঠে চকবাজার। তবে, একসময় এই চকবাজারকে বহুলোক চৌক বন্দর নামে ডাকতেন। মানসিংহের আমল থেকে চকবাজার যাত্রা শুরু করলেও এটি পূর্ণতা লাভ করেছিল মুর্শীদকুলি খাঁর সময়ে।

মুর্শিদ কুলি খাঁর পর ওয়াল্টার সাহেব নতুন করে চকবাজার তৈরি করেন। সে সময় তিনি কোমর পর্যন্ত উচু দেওয়াল দিয়ে চকবাজার ঘিরে দিয়েছিলেন এবং বাজারে প্রবেশের জন্য ১৬টি গেট করে দিয়েছিলেন। পুরান ঢাকার চকবাজারের ইফতারির খ্যাতি আর ঐতিহ্যের কথা এখন আর কারো অজানা নেই। রমজান উপলক্ষে প্রতিবারই জমে ওঠে এ ইফতার বাজার। রোজার শুরুতেই বাহারি ইফতারের পসরা সাজানো হয় ঢাকার এ প্রাচীন স্থানটিতে, যা থাকে মাসজুড়েই।
চকবাজার ঘুরে দেখা যায়, দুপুর থেকেই দোকানিরা বৈচিত্রে ভরপুর লোভনীয় ইফতার সামগ্রী থরে থরে সাজিয়ে রাখছেন টেবিলে। বাহারি সেই ইফতার কিনতে প্রথম দিন থেকেই ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।

ব্যবসায়ীরা জানান, বাহারি ইফতারের মধ্যে সুতি কাবাব কেজি প্রতি ৬০০-৬৫০ টাকা, খাসির সুতি কাবাব ৮০০-৮৫০, সামি কাবাব ৪০-৫০, টিক্কা কাবাব ৩০-৪০, চাপালি কাবাব প্রতি পিস ৫০-৬০, মুরগির রোস্ট প্রতি পিস ১২০-২৫০, আস্ত মুরগি মোসাল্লাম পিস ৩৫০-৪০০ টাকা।

দুধ ও পেস্তা বাদামের শরবত লিটার প্রতি ২০০-২৫০ টাকা, লাবাং ২৫০-২৮০, ফালুদা বড় বক্স ১৫০-২০০ টাকা। জিলাপির কেজি ১৫০-২০০ এবং ঘিয়ে ভাজা জিলাপি ৪০০-৬০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। টানা পরোটা ৩০-৪০ টাকা, খাসির মাংসের কিমা পরোটা ৬০-৭০ টাকা, গরুর মাংসের কিমা পরোটা ৪০-৫০ এবং ৫-১০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে বেগুনে, পেঁয়াজু, আলুর চপ, সমুচা। এছাড়া খাসির লেগ রোস্ট প্রতি পিস ৬০০ টাকা।

Facebook Comments