নুসরাত হত্যার তদন্ত, যা বললো হাইকোর্ট

নিপীড়নের পর গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার শিকার ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির ঘটনায় এখন পর্যন্ত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টটিগেশন (পিবিআই) যে তদন্ত করছে তাতে সন্তুষ্ট হাইকোর্ট।
বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ ঘটনায় বিচারিক কমিশন চেয়ে রিট উপস্থাপনের পর রোববার আদালত এমন মন্তব্য করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন ইউনুছ আলী আকন্দ।
পরে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, সবকিছু মিলিয়ে পিবিআইর তদন্ত কাজ সন্তোষজনক প্রতীয়মান হয়েছে। ফলে একদিকে ওনারা (আদালত) চান না যে, আদালতের রায়ে তদন্তে কোনো রকম প্রভাবিত হোক। আরেকটা হলো এখন পর্যন্ত সব বিষয় সুষ্ঠুভাবে চলছে। এ মুহূর্তে এ বিষয়ে আদালত হস্তক্ষেপের যৌক্তিক কারণ দেখছেন না। আদালত আরও এক সপ্তাহ দেখবেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আরও বলেন, আমাদের কাছে যে তথ্য আছে। আশাকরি দ্রুত চার্জশিট দাখিল হবে। পিবিআইকে সব রকমের স্বাধীনতা দেয়া আছে।রিটকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, পিবিআই যথাযথ তদন্ত করছে। তিনি বলেন, ওই মাদরাসার কমিটির বিরুদ্ধে একটি সম্পূরক আবেদন দিয়েছি। ইতিমধ্যে কমিটি বাতিল করা হয়েছে। বাতিল করলেই হবে না। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আবেদন করেছি। আদালত এটা রাষ্ট্রপক্ষকে দিতে বলেছেন।
গত ১৭ এপ্রিল ওই ঘটনা অনুসন্ধানে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।
ওই আবেদনে নুসরাতকে রক্ষায় অবহেলাকারী আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, ঘটনা অনুসন্ধানে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন, ঘটনার বিচারে দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, নুসরাতের পরিবারের জন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার এক ছাত্রী সহপাঠী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে, এমন সংবাদ দিলে তিনি ওই ভবনের তিন তলায় যান। সেখানে মুখোশধারী বোরকা পরিহিত ৪-৫ জন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। তিনি অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।গত ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত।
এর আগে ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানি করেন অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। ওই দিনই অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাকে আটক করে পুলিশ। সে ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।

Facebook Comments