কাল থেকে হাইস্পিড ট্রেন বনলতা এক্সপ্রেস চলবে

রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী রুটে নতুন বিরতিহীন বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার সকালে ট্রেনটি উদ্বোধন করবেন।এটি দেশের প্রথম এবং সর্বাধুনিক হাইস্পিড ট্রেন।
রেলপথ মন্ত্রণালয়েলর সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. শরিফুল আলম এই তথ্য জানিয়েছেন।
মো.শরিফুল আলম জানান,দ্রুতগতির বিরতিহীন আধুনিক এ ট্রেন পরিচালনার ফলে রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী রুটে চলাচলকারী যাত্রী সাধারণের নিরাপদ আসা-যাওয়া সহজতর, দ্রুততর ও আরামদায়ক হবে।
সংগৃহীত কোচসমূহের অন্যতম নতুন বৈশিষ্ট্য হল- বায়ো-টয়লেট সংযোজন। বায়ো-টয়লেট সম্বলিত কোচ দ্বারা বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর মধ্য দিয়ে পরিবেশবান্ধব রেল ব্যবস্থায় বাংলাদেশ আরো একধাপ এগিযে গেল। ট্রেনটিতে প্রতিবন্ধী যাত্রীদের হুইল চেয়ারসহ চলাচলের সুবিধার্থে থাকছে প্রসস্থ দরজা (প্রধান ও টয়লেট দরজা) এবং নির্ধারিত আসনের সুবিধা। প্রতিটি কোচ স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি এবং অত্যাধুনিক যাত্রি সুবিধা স্বম্বলিত।
প্রতিটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচে আধুনিক ও উন্নতমানের রুফ মাউন্টেড এয়ার কন্ডিশনার ইউনিট এবং এয়ার কার্টেইনের ব্যবস্থা রয়েছে।নতুন আমাদানিকৃত কোচসমূহ স্টেইনলেস স্টিল বডির তৈরি। জার্মানির ডিজাইনে তৈরি উচ্চগতি সম্পন্ন বগি। জার্মানির তৈরি আধুনিক অটোমেটিক এয়ার ব্রেক সিস্টেম। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এলইডি লাইট। অজুখানাসহ নামাজ ঘর। সুইং ডোরের পরিবর্তে নিরাপদ স্লাইডিং ডোর।
যাত্রী সাধারণের জন্য আধুনিক ও মানসম্মত চেয়ার, বার্থ, স্টেয়ার, পার্সেল রেক, টিভি মনিটর হ্যাঙ্গার, ওয়াই-ফাই রাউটার হ্যাঙ্গার, মোবাইল চার্জারের ব্যবস্থা রয়েছে। রুফ রাইডার কর্তৃক পথিমধ্যে অনাকাঙ্খিত ট্রেন থামানো রোধে বিশেষভাবে ডিজাইনকৃত অ্যালার্ম চেইন পুলিং সিস্টেম। খাবার গাড়ির অত্যাধুনিক ডাইনিং সুবিধা রয়েছে ট্রেনটিতে।
ট্রেনটিতে সংযুক্ত রয়েছে উড়োজাহাজের মতো বায়োটয়লেট। এ কারণে মলমূত্র আর রেললাইনের ওপরে পড়বে না। ট্রেনটিতে থাকছে রিক্লেনার চেয়ার। আছে ওয়াইফাই সুবিধা। প্রতিটি বগিতে রয়েছে এলইডি ডিসপ্লে। যার মাধ্যমে স্টেশন ও ভ্রমণের তথ্য প্রদর্শিত হবে। কিন্তু থাকছে না শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোনো ধরনের স্লিপিং বার্থ।
১২টি কোচ দ্বারা ট্রেনটি চলবে। এর মোট আসন সংখ্যা ৯২৮। এর মধ্যে এসি চেয়ার ১৬০টি, শোভন চেয়ার ৬৪৪টি, খাবার গাড়িতে আসন ১০৮টি এবং পাওয়ার কারে ১৬টি।
বিশেষ এই ট্রেনটি শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন চলবে।ট্রেনটি রাজশাহী থেকে সকাল ৭টায় ছেড়ে ঢাকা পৌঁছাবে সকাল ১১টা ৪০মিনিটে এবং ঢাকা থেকে ছাড়বে বেলা ১টা ১৫মিনিটে এবং রাজশাহী পৌঁছাবে সন্ধ্যা ৬টায়।
ট্রেনের ভাড়া একই রুটে চলমান ট্রেনের ভাড়ার তুলনায় নন-স্টপ সার্ভিস চার্জ ১০% বেশি আরোপিত হবে। এছাড়া এই ট্রেনটিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রথম নিজস্ব ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম সার্ভিসেস (বিআরসিটিএস) দ্বারা খাবার সরবরাহ করা হবে।খাবার মুল্য ১৫০ টাকাসহ শোভন চেয়ারের মূল্য ৪২৫ টাকা এবং এসি চেয়ারের মূল্য ৮৭৫ টাকা।
নতুন ট্রেনের ব্যবহৃত ব্রডগেজ কোচসমূহ এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য মিটারগেজ ও ব্রডগেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ সংগ্রহ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ইন্দোনেশিয়া থেকে সংগৃহীত হয়েছে।

Facebook Comments