ঈদের পর শুরু হচ্ছে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সফর

চলতি বছরের শেষ দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন। আর এর আগেই তৃণমূল গোছাতে সাংগঠনিক সফর পরিচালনা করবে দলটি। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে প্রতিটি বিভাগে একটি করে সাংগঠানিক টিম গঠন করা হয়েছে। আগামী রোজার ঈদের পরপরই সাংগঠনিক সফর শুরু করবে দলটি।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, ঈদের আগেই আওয়ামী লীগের তৃণমূলে সাংগঠনিক সফর পরিচালনা করার কথা ছিল। তবে ২৪ এপ্রিল থেকে জাতীয় সংসদের অধিবেশন বসছে। এমপিরা অধিবেশনে যোগ দেবেন। সে কারণে সংসদ শেষ হলে সাংগঠনিক সফরে বের হতে হবে। এছাড়া রমজান মাস চলে এসেছে। গ্রীষ্মকালে পবিত্র মাহে রামজান শুরু হওয়ায় রোজাদারদের কথাও বিবেচনা করছে। সেই হিসাবে আগামী ঈদের আগে সাংগঠনিক সফরের কোনো সম্ভাবনা নেই। এছাড়া সাংগঠনিক সফরের মাধ্য দিয়ে সম্মেলনের আগে নিজেদের শক্তি জানান দিতে চায় দলটি। তাই বেশ প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামছেন তারা।
জানা গেছে, টানা তিন মেয়াদে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব থাকায় তৃণমূলে বিশেষ নজর দিতে পারেনি দল। ফলে বেশ অগোছালো অবস্থা বিরাজ করছে সেখানে। ২০তম জাতীয় সস্মেলনের পর কোন জেলা কমিটিই পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি, হয়নি বেশিরভাগ জেলা উপজেলা সম্মেলন। এছাড়া ইউনিয়ন কমিটিগুলোও সম্মেলন হয়না দীর্ঘদিন। সব মিলিয়ে একটি হযবরল অবস্থায় রয়েছে ক্ষমতাসীন দলটির তৃণমূল। এছাড়া টানা সরকার পরিচালনার ফলে অন্য দল থেকেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হারে নেতাকর্মীরা অনুপ্রবেশ করেছে। এসব সমস্যা সমাধানের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামছেন অভিজ্ঞ ও নবীন সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত আওয়ামী লীগের টিম।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সফর কবে শুরু হচ্ছে সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমানের কাছে। তবে এ বিষয়ের সরাসরি কোন উত্তর তিনি দেননি। তিনি বলেন, সাংগঠনিক সফর কবে থেকে শুরু হবে সেটা এখনো ঠিক হয়নি। তবে এক এক টিম তাদের সুবিধা অনুযায়ী সাংগঠনিক সফর পরিচালনা করেবন।
এদিকে কেন্দ্রীয় নেতাদের দলীয় তৎপরতা বাড়াতে উপদেষ্টা, প্রেসিডিয়াম ও কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্যদের নিয়ে ঘন ঘন বৈঠকও করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। বৈঠকগুলোয় আগামী সম্মেলন ও দলে করণীয় নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। দলটির একাধিক নেতা জানান, হঠাৎ করে এত ঘন ঘন সভা বেশ কিছু ইঙ্গিত বহন করে।
সাংগঠনিক সফরের বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, প্রতি সম্মেলনের আগেই সাংগঠনিক সফর পরিচালিত হয়। তবে বাস্তবিক অর্থে এই মুহূর্তেই সাংগঠনিক সফর শুরু করা যাবে না। সংসদ অধিবেশন ও রোজার শেষেই সফর শুরু হবে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সফর থেকে তৃণমূলের নেতাদের কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হবে। বিশেষ করে দলীয় কার্যক্রমে দায়িত্ব পালনে যারা ব্যর্থ হয়েছেন, সম্প্রতি শেষ হওয়া বিভিন্ন নির্বাচনে যারা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে কাজ করেছেন এবং অন্য দল থেকে যারা অনুপ্রবেশ করেছেন তাদের তালিকা করে প্রতিটি বিভাগীয় টিম প্রতিবেদন দলীয় সভাপতির নিকট প্রতিবেদন দাখিল করবেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি পরবর্তীতে সেগুলো মূল্যায়ন করে ব্যবস্থা নেবেন।

Facebook Comments