জুলাই থেকে চালু হচ্ছে ই-পাসপোর্ট

‘ই-পাসপোর্ট’ ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয় বর্ডার কন্টোল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করতে আগামী জুলাই মাস থেকে দেশের সব নাগরিকদের জন্য ‘ই-পাসর্পোট’ ইস্যুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।এর আগে অন্তর্বতীকালীন চাহিদা মেটাতে জরুরি ভিত্তিতে ২০ লাখ মেশিন রিড্যাবল পাসপোর্ট (এমআরপি) ক্রয় করা হচ্ছে।
জানা গেছে, সরকার যে ই-পাসপোর্ট দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে তা এমআরপির চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ১১৮টি দেশে এ ধরনের পাসপোর্ট চালু রয়েছে। ‘ই-পাসপোর্ট’ চালু হলে বর্তমান এমআরপির ডাটাবেজ থেকে সব তথ্য ই-পাসপোর্ট ডাটাবেজে স্থানান্তর করা হবে এবং বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে চাহিদা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে ‘ই-গেট’ স্থাপনের মাধ্যমে ‘ই-পাসপোর্ট’ ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয় বর্ডার কন্ট্রোল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করা হবে।
২০ লাখ এমআরপির প্রতিটির দাম পড়বে প্রায় সাড়ে তিন মার্কিন ডলার। একটি ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান এই পাসপোর্টগুলো সরবরাহ করবে।এর আগেও একই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সরকার এমআরপি সংগ্রহ করেছিল। তবে জরুরি ভিত্তিতে এই পাসপোর্ট সরবরাহের কারণে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত ১০ ভাগ বেশি দাম দিতে হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে,পরিবহন ব্যয়সহ ২০ লাখ এমআরপি কিনতে (প্রতিটি বুকলেট ১ দশমিক ৩১৪ ডলার ও প্রতিটি লেমিনেশন ফয়েল ১ দশমিক ১ ডলার দরে) ব্যয় হবে ৪৮ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৬ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় এর মূল্যমান হচ্ছে ৪০ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত বছর ডিসেম্বর থেকে ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ার কথা ছিল। সরবরাহকারী জার্মান প্রতিষ্ঠান ‘ভেরিডোস’-এর সঙ্গে রি-শিডিউল অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জুলাই থেকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে এটি চালু হবে। দেশের বাইরে সব মিশন ও অভ্যন্তরীণ পাসপোর্ট অফিসগুলোতে এটি পুরোপুরি চালু হতে দুই বছর সময় লাগবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে পাসপোর্টের অন্তবর্তীকালীন চাহিদা পূরণের জন্য আগের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান যুক্তরাজ্যের ‘ডি লারু ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড’ থেকে প্রথম দফায় অতিরিক্ত ৫০ লাখ এমআরপি বুকলেট ও ৫৫ লাখ লেমিনেশন ফয়েল ক্রয়ের সম্পূরক প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
মূল চুক্তি অনুযায়ী এতে প্রতিটি বুকলেট ১ দশমিক ১৯৪ মার্কিন ডলার ও প্রতিটি লেমিনেশন ফয়েলের দাম ১ মার্কিন ডলার রাখা হয়েছিল। মূল চুক্তিতে ১ কোটি ৫০ লাখ পাসপোর্ট ও সমপরিমাণ লেমিনেশন ফয়েল ক্রয় করা হয়েছিল। কিন্তু পাসপোর্টের মজুদ কমে যাওয়ায় বর্তমানে দ্বিতীয় দফায় আরো ২০ লাখ বুকলেট ও ২০ লাখ লেমিনেশন ফয়েল ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে আগের দরের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি ব্যয় হচ্ছে। নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হলে পাসপোর্ট পেতে ১০ থেকে ১২ মাস সময় লাগবে বিধায় আগের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেই পাসপোর্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে।
বর্তমানে দৈনিক গড়ে এমআরপি পাসপোর্টের চাহিদা হচ্ছে ২০ হাজার। প্রতি মাসে পাসপোর্ট লাগে প্রায় ৪ লাখের বেশি এবং হজের মৌসুমে চাহিদা আরো ২ লাখ বেড়ে যায়। এর বিপরীতে গত ১২ মার্চ তারিখে মোট এমআরপি পাসপোর্ট বুকলেটের সংখ্যা ছিল ২০ লাখ ৮৭ হাজার ৯৯৩টি এবং লেমিনেশন ফয়েলের সংখ্যা ছিল ২১ লাখ ৯৩ হাজার ২৩০টি। এর মধ্যে পাসপোর্ট সরবরাহের অপেক্ষায় রয়েছে ১৭ লাখ ৪৪ হাজার এবং প্রকৃত মজুদের সংখ্যা হচ্ছে মাত্র ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৩টি।

Facebook Comments