নুসরাত হত্যায় শিক্ষক কাদির ঢাকায় গ্রেপ্তার

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত অষ্টম তথা শেষ আসামি হাফেজ আবদুল কাদিরকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। আবদুল কাদিরকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি বুধবার নিশ্চিত করেছে পিবিআইয়ের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র।
গ্রেপ্তারের বিষয়ে আবদুল কাদিরের মামা মাহবুবুল আলম বলেন, মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে মিরপুরের ৬০ ফিট এলাকা সংলগ্ন ছাপড়া মসজিদের কাছে বড়ভাই রহিমের বাসা থেকে আবদুল কাদিরকে আটক করে পিবিআই।
আবদুল কাদির ফেনীর আমিরাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব সফরপুর গ্রামের মনছুর খান পাঠানবাড়ির আবুল কাসেমের ছেলে। সে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক ও একই মাদ্রাসার ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সে অধ্যক্ষ সিরাজের অনুগত হিসেবে মাদ্রাসার হোস্টেলে থাকত।
গত ৬ এপ্রিল নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার পরদিন মালামাল নিয়ে হোস্টেল ছেড়ে বাড়ি চলে যায়। ৮ এপ্রিল কাদেরসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান মামলা করার পর সে আত্মগোপনে চলে যায়। আলোচিত এ মামলায় এজাহারভুক্ত আটজনসহ এখন পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। এদের মধ্যে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম ও নুসরাতের সহপাঠীরা রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, নুসরাত সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে তাকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে অধ্যক্ষের পক্ষ থেকে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় তাকে কৌশলে ছাদে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে তার গায়ে দাহ্য পদার্থ দিয়ে আগুন দেওয়া হয়। বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান।

Facebook Comments