বৈশাখে যেমন হবে শিশুর পোশাক

দেশবাংলা ডেস্ক :

যে কোনো উৎসব ছোটদের বেশি আনন্দ দেয়। আর শিশুরা উৎসবগুলোতে পোশাকের মাধ্যমে তাদের আনন্দের অনেকটা প্রকাশ করে থাকে। তাই তাদের পোশাকও একটু বেশি জাঁকজমক করে তৈরি করা হয় অর্থাৎ রঙের ছটা যেন একটু বেশিই থাকে পোশাকে।
সামনেই পহেলা বৈশাখ। তাই বড়দের পাশাপাশি ছোটদের জন্যও থাকে অনেক আয়োজন। পোশাক সুতি, খদ্দর, লিনেন, ভিসকস, সিল্ক, হাফ সিল্ক ইত্যাদি দিয়ে পোশাক তৈরি করে থাকেন ফ্যাশন ডিজাইনাররা।
ছোটদের জন্য শাড়ি, পাঞ্জাবির পাশাপাশি স্কার্ট, ফতুয়া, ফ্রক, টপ কামিজ, শার্ট, টি-শার্ট, ধুতিও রয়েছে। দেশি দশের বিভিন্ন বুটি হাউজে শাড়ি, পাঞ্জাবি ও ফতুয়ায় রয়েছে রঙের ছটা, স্প্রে, টাই-ডাই, ব্লক, বাটিক, হাতের কাজ ইত্যাদি।
তবে সাদাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বেশি আর লাল রঙ তো ছোটদের সবসময় মানানসই। কিন্তু সেই সাথে অন্যান্য উজ্জ্বল রঙ যেমন নীল, হলুদ, কমলা, সবুজ, কালো ইত্যাদি রংও তাদের জায়গা করে নিয়েছে। লাল সাদার পটভূমিতে নানান রঙের খেলা এইবার পোশাকে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
ছোট ছেলেদের জন্য আছে ফতুয়া, শার্ট, টিশার্ট আর পাঞ্জাবী। পাঞ্জাবীর সাথে এবার ধুতি এবং পায়জামা দুইটি বেশ চলছে। অন্যান্য কাপড় থাকলেও গরমের কথা মাথায় রেখে অধিকাংশ পোশাক তৈরি করা হয়েছে আরামদায়ক পাতলা সুতি ও খাদি কাপড় ব্যবহার করে।
পাঞ্জাবীতে সাদা ও লাল রঙ প্রাধান্য থাকলেও হাতে, গলায় বা পাশে অন্যান্য রঙের ব্যবহারও কিন্তু হয়েছে বেশ। অন্যদিকে মেয়ে শিশুদের জন্য আছে শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, ফতুয়া, স্কার্ট আর টপ, ফ্রক ও কিছু পাশ্চাত্যের পোশাকের আদলে তৈরি পোশাক।
এবার ছেলে মেয়ে উভয়ের পোশাকে এমব্রয়ডারি, স্কিন প্রিন্ট, এপ্লিক, কারচুপি ইত্যাদি কাজ বেশি হয়েছে। সেই সাথে আছে ব্লক, টাইডাইয়ের কাজ। এছাড়া ছেলে ও মেয়ে শিশু উভয়ের পোশাকেই এমব্রয়ডারি কাজ করা হয়েছে প্রধানত গলা, হাতা ও শাড়ির আঁচলে।
মেয়েদের শাড়ি এবং ছেলেদের পাঞ্জাবীর হাতে ব্লকের কাজ বেশি দেখা গেছে। মেয়েদের সালোয়ার কামিজ আর ফতুয়াতে ইয়কের কাজ এখন ফ্যাশনের অংশ
অনেক ক্ষেত্রে ডিজাইনারা ৭০-৮০ দশকের ফ্যাশনের একটু ছোঁয়া রেখেছে। দেশিয় ঐতি্য্যের অংশ কুলা, মুখোশ, পাখা, ঢোল, হাতী ইত্যাদি মোটিভের ব্যবহার আছে।
তবে কাপড়ের কাটিংয়ে আবার বোহেমিয়ান ফ্যাশন পাওয়া যাবে বিশেষ করে এমব্রয়ডারির কাজে। বোহিমিয়ান ফ্যাশনের সাথে ফিউশন করে দেশিয় মোটিভও রাখা হয়েছে। আবার জিওমেট্রিক ও ফ্লোরাল মোটিভও পাবেন বিভিন্ন কাপড়ে। অনেকেই আবার মা বাবা ও সন্তানদের একই পোশাক ডিজাইন করেছে।
অনেকেই সাদা লালের পাশাপাশি বিভিন্ন রং ব্যবহার করে ভিন্নতা আনার চেষ্টা করেছেন। এছাড়াও সামনের যেহেতু ঈদ তাই বৈশাখ ও ঈদকে চিন্তায় রেখে রংগুলো বাছাই করা হয়েছে। মেয়েদের শাড়ি, সালোয়ার কামিজে হ্যান্ডলুম এমব্রয়ডারি, ব্লক, বাটিক ও টাইডাইয়ের কাজ করা হয়েছে।
এবার বৈশাখে দেশিয় বিভিন্ন বুটিক হাউজে মোটিভ হিসেবে ফুল পাখি, প্যাঁচা, মাছ ইত্যাদির পাশাপাশি গ্রামীন নারীদের কর্মজীবনকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যেমন ঢেকিতে ধান ভাঙা, মাছ কাটা, বেদিনী, আবার আধুনিক নারীদের সাইকেল, স্কুটি চালানো ইত্যাদিও দেখা যাবে।
কাপড়ে কাজের ক্ষেত্রে রয়েছে বিভিন্ন ড্রইং, স্কিন প্রিন্ট, ব্লক, হাতের সেলাই যেমন কাঁথা স্টিজ, বোতাম স্টিজ ইত্যাদি। আর রং এর ক্ষেত্রে লোকজ শিল্পে যে রং গুলো বেশি ব্যবহার হয় তাই বেশি পাওয়া যাবে।
গরমের জন্য কাটিংয়ে রাখা হয়েছে একেবারেই ভিন্নতা। পায়জামা ও হাতা একটু ঢিলাঢালা অর্থাৎ প্লাজো, ঢোল পায়জামা, বেশি কুচি দেয়া পায়জামা ও একটু ঢিলা হাতা রাখা হয়েছে।

Facebook Comments