প্রধানমন্ত্রীর কাছে জীবন ভিক্ষা চাইলেন জয়

সম্প্রতি বনানীর অগ্নিকাণ্ডে পানির পাইপের ফুটো চেপে ধরে ভাইরাল হয় শিশু নাঈম ইসলাম। নাঈমের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে তাকে সবাই বাহবা দিতে থাকে। এমনকি তার কাজে খুশি হয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক বাংলাদেশি তাকে পাঁচ হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় আলোচনায় আসার পর শিশু নাঈমের সাক্ষাতকার নেন জনপ্রিয় অভিনেতা ও উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয়। এসময় নাঈমের সঙ্গে তার বাবা-মাও ছিলেন। নাঈম পুরস্কারের সেই টাকাগুলো নেবে কিনা? আর নিলেও সেই টাকা কিসে খরচ করবে? এমন প্রশ্ন করেন উপস্থাপক জয়। জবাবে নাঈম জানায়, সেই টাকাগুলো সে এতিমখানায় দান করে দিতে চায়।
এতিমখানায় কেন টাকা দিতে চাও? জয়ের এমন প্রশ্নের উত্তরে নাঈম বলেন, কিছু বছর আগে খালেদা জিয়া এতিমের টাকা লুট করে খেয়েছে তাই এই টাকা তিনি এতিমদের দিতে চান। তবে শিশু নাঈমকে এ ধরনের প্রশ্ন করে তোপের মুখ পড়েন জয়।
অনেকেই দাবি করেন,ওই শিশুটি নিজ থেকে এসব কথা বলেনি। উপস্থাপক জয় শিশু নাঈমকে কথাগুলো শিখিয়ে দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে শিশুটির কথা বলার ধরনেই তা স্পষ্ট। বিষয়টি স্বীকার করেছেন শিশু নাঈমও। তবে কে শিখিয়ে দিয়েছেন সে বিষয়টি স্পষ্ট করেননি নাঈম।
বিষয়টি নিয়ে এতদিন চুপ থাকলেও অবশেষে মুখ খুলেছেন জয়। এক ভিডিও বার্তায় এ অভিনেতা বলেন,আমি এখন আপনাদের সামনে কিছু কথা বলব। কথাগুলো অত্যন্ত জরুরি। কারণ আপনারা সবাই আমার ওপর ক্ষিপ্ত এবং আপনারা আমাকে বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন দিচ্ছেন, হুমকি দিচ্ছেন। আমার ফেসবুক হ্যাকড হয়েছে। আমাকে গালাগালি করছেন। কিন্তু আমি একটি কথা আপনাদের খুব দৃঢ়ভাবে বলতে চাই এই যে নাঈম ছেলেটির আমি সাক্ষাৎকার নিয়েছি… আমি সবসময় সাক্ষাৎকারের অনুষ্ঠান করি, কিন্তু আমি আল্লার কসম দিয়ে বলছি যে নাঈমকে আমি কোনো কথা শিখিয়ে দেইনি।
জয় আরো জানান, আপনারা যারা আমাকে ভুল বুঝছেন, আমি আপনাদের একটি অনুরোধ করতে পারি যে আপনারা আমাকে একদম মিছেমিছি ভুল বুঝছেন, আমার ফেসবুক হ্যাকড করেছেন, আমাকে অপমান করেছেন, আমাকে আপনারা হুমকি দিচ্ছেন, আমার জীবন হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছেন। কিন্তু আমি বলব যে, আমি এর জন্য দায়ী না। যে যার বক্তব্য দেয়, কোনো বক্তব্য শেখানো নয়।
সাক্ষাতকারে নাঈম ও তার বাবা ছিল,মা ছিল। তার বক্তব্য সে নিজের দায়িত্বে দিয়েছে। তবে সে কোথাও থেকে শিখে এসেছে কী না আমি বলতে পারবো না। আমি শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলছি, আমি এটা বলিনি। তাকে শিখাইনি। যদি কখনো কেউ প্রমাণ করতে পারে আমি শিখিয়েছি তাহলে আমি কোনো দিন উপস্থাপনা করবো না। আপনারা না চাইলে আমি এই উপস্থাপনা পেশাই ছেড়ে দেব।
এসময় সবার উদ্দেশ্য জয় বলেন, আপনারা আমাকে অপমান অপদস্থ ও হুমকি দেবেন না। আমি বাঁচতে চাই, থাকতে চাই, কাজ করতে চাই। আমি খুবই সাধারণ একজন মানুষ। আমি মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, সবার প্রতি সবার কাছে আমার জীবন ভিক্ষা চাই। কেননা আমি যে ধরনের হুমকি পাচ্ছি সে ধরনের হুমকি নিয়ে আসলে বেঁচে থাকা মুশকিল। আপনারা সবাই ভালো থাকবেন ও আমাকে ক্ষমা করবেন।
এ অভিনেতা আরো বলেন, নাঈম যে বক্তব্য দিয়েছে সে কোথাও থেকে শিখে এসেছে কি-না আমি জানি না। কিন্তু সে আমার অনুষ্ঠানে বসে নিজের দায়িত্বে এ কথা বলেছে। কোনো জাতীয় নেতা নিয়ে কোনো মন্তব্য করার সাহস আমার নেই এবং আমি করতেও চাই না। কারণ সবাই সম্মানিত। জাতীয় নেতা যারা বা যারা একসময় ক্ষমতায় ছিলেন বা এখন ক্ষমতায় আছেন সবাই সম্মানিত। আমার মতো ক্ষুদ্র মানুষের তাদের নিয়ে কোনো আলোচনা সাজে না। হ্যাঁ, আমি বিশেষ দলের সমর্থক হতে পারি। কিন্তু আমি অন্য দল নিয়ে কটূক্তি করার বা অন্য দলের নেতা নিয়ে কটূক্তি করার অধিকার রাখি না এবং আমি সেটা করিও না।

Facebook Comments