শুরু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্প

আজ শুক্রবার শুরু হয়েছে বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্প-২০১৯।স্পেলবাউন্ড লিও বানেট এর প্রস্তাবনার আলোকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় প্রথমবারের মত সারাদেশের সকল পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মিলিত অংশগ্রহনে এই গেমসের আয়োজন করা হয়েছে।আজ সকালে ম্যারাথন ও সাইক্লিং প্রতিযোগিতার মাধ্যমে রাজধানীর হাতিরঝিলের এফ্লিথিয়েটারে মাসব্যাপী এ প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ত্ব করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘স্কুল করেজের ছাত্র-ছাত্রীরা পর্যাপ্ত খেলাধুলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে না বলেই ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে। ঝুঁকে পড়ছে মাদকের দিকে। সেই দিক থেকে বিবেচনা করলে এই টুর্নামেন্টের প্রতিপাদ্য বিষয়টি যথার্থই। এই প্রজন্মকে মাদকের কালো থাবা থেকে দূরে রাখতে হলে খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই। বেশি বেশি করে এরকম প্রতিযোগিতা আয়োজনের উদ্যোগ নিতে হবে। তরুণরাই হচ্ছে আগামী বাংলাদেশ গড়ে তোলার কান্ডারি। তাই তাদের পথভ্রষ্ট হতে দেয়া যাবেনা। তারুণ্য জেগে উঠলে বাংলাদেশ জেগে উঠবে।’ প্রতি বছর নিয়মিত ভাবে প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করার জন্য আয়োজকদের প্রতি আহ্বান জানান আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।এ সময় অনুষ্ঠানের সভাপতি এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল বলেন,‘ বাংলাদেশে এই প্রথম পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে এমন টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রীক সবচেয়ে বড় ইভেন্ট। ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। দেশ থেকে মাদক নিয়ন্ত্রণে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী। ইতোমধ্যে দেশ থেকে জঙ্গীবাদ অনেকটাই নির্মুল হয়েছে। খেলাধুলার মাধ্যমে এখন যুব সমাজকে মাদকের আসক্তি থেকে দূরে রাখতে হবে। ’


অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। এরপর প্রদর্শিত হয় পৃষ্ঠপোষক পোলার আইসক্রিম নির্মিত একটি প্রামাণ্য অনুষ্ঠান। পরে মশাল জ্বালিয়ে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এই মশালটি আগামী ১৭ দিনে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী ৬৫টি বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে আগামী ১৭ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সমাপনী অনুষ্ঠানে পৌঁছাবে।
পরে সাইক্লিং ও ম্যারথনে বিজয়ীদের মাধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। পুরুষদের ম্যারাথনে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. মাহফুজুল হক, রানার্স-আপ হয়েছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. আল আমিন এবং তৃতীয় হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. আবুল কাশেম।
মেয়েদের ম্যারাথনে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের তামান্না আকৃতি, রানার্স-আপ হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হামিদা আক্তার এবং তৃতীয় হয়েছেন একই বিশ্ববিধ্যালয়ের সাদিয়া ইসলাম মোনা।
ছেলেদের সাইক্লিংয়ে প্রথম হয়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির হাফিজ উদ্দিন, দ্বিতীয় হয়েছেন ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের মো. সাইফুল ইসলাম রাসেল এবং তৃতীয় হয়েছেন বাংলাদেশ ইউনির্ভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজির ছাত্র পলাশ রায়।
মেয়েদের সাইক্লিংয়ে প্রথম হয়েছেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বা বিশ্বাস এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছেন যথাক্রমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লিপি আক্তার ও হামিদা আক্তার জেবা।
চ্যাম্পিয়নশীপের ১০টি ডিসিপ্লিনে ৬৫ টি পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। ডিসিপ্লিনগুলো হচ্ছে ক্রিকেট, ফুটবল, হ্যান্ডবল, সুইমিং, সাইক্লিং, ভলিবল, সাঁতার, অ্যাথলেটিক্স, টেবিল টেনিস ও বাস্কেটবল।
প্রতিটি ডিসিপ্লিনের জাতীয় ফেডারেশনের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া বিভাগের কর্মকর্তারা আজকের এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

Facebook Comments