তাক্বওয়ার গুরুত্ব ও ফজিলত

আল কুরআনে সাধারণত তাক্বওয়া শব্দটি তিনটি অর্থে প্রয়োগ হয়েছে।
১। ভয় ভীতি অর্থে- যেমন মহান আল্লাহ বলেন, তোমরা শুধু আমাকেই ভয় কর। (সূরা বাকারাহ- ২/৪১) আরও দেখুন- ২/২৮১,৭৬/৭।
২। আনুগত্য ও ইবাদত অর্থে- যেমন মহান আল্লাহ পাক বলেন, হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে যথাযথভাবে ভয় কর এবং তোমরা মুসলিম তথা আত্মসমর্পণকারি না হয়ে কোনো অবস্থায় মরো না। (সূরা আল ইমরান- ৩/১০২)
এটা হচ্ছে আনুগত্য করা, অবাধ্যতা না করা, আলাহর জিকির করা, তাকে ভুলে না যাওয়া, তার শুকরিয়া আদায় করা, অকৃতজ্ঞ না হওয়া। (তাফসীর তাবারী- ৩/৩৭৫পৃ)
৩। পাপাচার বা গোনাহর পঙ্কিলতা থেকে অন্তরকে পবিত্র করা- মহান আল্লাহ বলেন, যারা আল্লাহর ওপর তার রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে ও তার অবাধ্যতা হতে সাবধান থাকে তারাই সফলকাম। (সূরা নূর- ২৪/৫২)
প্রথমোক্ত দুটি আয়াতের অপেক্ষা এ আয়াতটিতে আরও পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে তাক্বওয়ার বিষয়টি আগের আয়াতের অপূর্ণতার পূর্ণতা এখানে ফুটে উঠেছে। বরং আমার ক্ষুদ্র দৃষ্টিতে আয়াতটিকে আল্লাহর দেওয়া তাক্বওয়ার সংজ্ঞা বলা যেতে পারে।
তাক্বওয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে আয়াতসমূহ :
১) তাক্বওয়া বান্দার জন্য সর্বোত্তম ভূষণ। (সূরা আরাফ ৭:২৬)
২) তাক্বওয়ার ওপর মুমিন জীবনের ভিত্তি স্থাপিত হয়।
৩) তাক্বওয়াই অল্লাহর অলী বা বন্ধু চেনার উপায়। (ইউনুস ১০ : ৬২-৬৩ জাচিয়া ৪৫; ১৯)
৪) দেওবন্দী, ওহাবী, সুন্নি, মক্কি, মাদানি, নাম করণের মধ্যে নয়।
৫) তাক্বওয়াই মুমিন জীবনের সর্বোত্তম পাথেহ। ( ২ : ১৯৭)
৬) তাক্বওয়াই হলো সকল ইবাদাতের সার বস্তু। (হাজ্জ ২২ : ৩৭)
৭) তাক্বওয়ার দ্বারাই বান্দা আল্লাহর রহমত প্রাপ্ত হয়। (আরাফ ৭ : ১৫৬)
৮) তাক্বওয়াই জাহান্নাম থেকে বাঁচার উপায়। (১৯ : ৭১-৭২)
৯) তাক্বওয়াই জান্নাত লাভের উপায়। (যুমার ৩৯ : ৭৩)
১০) তাক্বওয়ার কাজে সহযোগিতা করা মুমিনদের প্রতি আল্লাহর নির্দেশ। (মায়িদা ৫/২)
১১) তাক্বওয়া না থাকলে তার আমল আল্লাহ কবুল করে না। (মায়িদা ৫/২৭)
১২) তাক্বওয়াই মুমিনদের সকল শয়তানের শয়তানি ধরিয়ে দেয়। (৭ : ২০১)
১৩) তাক্বওয়াই হক বাতিল নির্ণয়ের কষ্টিপাথর। (৮ : ২৯)
১৪) তাক্বওয়ার দ্বারাই পরকালীন জীবনে কল্যাণ লাভ হবে। (যুখরুফ ৪৩ : ৩৫)
১৫) তাক্বওয়াই দুনিয়ার জীবনে জনপদবাসীর কল্যাণ লাভের উপায়। (আরাফ ৭ :৯৬)
আল্লাহ পাক আমাদেরকে যথাযথভাবে তাক্বওয়া অর্জন করার তওফিক দান করুন।

Facebook Comments