বিএনপি ভাঙার ষড়যন্ত্র হচ্ছে

বিএনপিকে ভাঙতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে ওবায়দুল কাদের স্মৃতি সংসদ আয়োজিত এক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।বিএনপির প্রাক্তন নেতা কেএম ওবায়দুর রহমানের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপিকে ভাঙতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তবে বিএনপি কোনোদিন নিঃশেষ হবে না। বিএনপির রাজনীতি জনগণের রাজনীতি। এর আগে অনেকে বিএনপিকে ভাঙতে চেয়েছিলো। এরশাদ সরকার ভাঙতে চেষ্টা করেছে। এর পরে আওয়ামী লীগও ভাঙতে চেয়েছিলো, কিন্তু পারেনি। আবারো এখন ভাঙতে চেষ্টা করছে। কিন্তু একজন কর্মীকেও সরিয়ে নিতে পারেনি। এখন সময় কঠিন। এই কঠিন সময়ে অতিক্রম করতে হবে অত্যন্ত ধৈর্য ও সাহস নিয়ে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়া বিএনপির ভুল না কি সঠিক সিদ্ধান্ত নেতাকর্মীদের এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্দেশেই বিএনপি নির্বাচনে গেছে এবং নির্বাচনের পরেও তার নির্দেশেই ঐক্য ধরে রাখতে কাজ করছে দল।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আবেগ দিয়ে যুদ্ধ জয় করা যায়না। এখানে অনেকে অনেক কথা বলছেন। আমরা দেখেছি নেত্রী গ্রেপ্তার হওয়ার পরে যখন আমরা কর্মসূচি দিয়েছি, দেখেছি কতজন এসেছেন কতজন আসেননি। আমরা তো দেখেছি, কারা কারা কর্মসূচি থেকে আস্তে আস্তে চলে গেছেন। আমরা তো দেখেছি, এই নির্বাচনের মধ্যে কারা বেরিয়ে এসে প্রতিবাদ করেছেন। সুতরাং শুধুমাত্র কথা বলে একটি বদ্ধ আবদ্ধ ঘরের মধ্যে নিরাপদ জায়গায় এসব কথা বলে শত্রুকে পরাজিত করতে পারবো না।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচনকে আমরা একটি হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছিলাম। বেছে নিয়েছিলাম খালেদা জিয়া নির্দেশে। আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে, আমাদের সাধারণ সভায় তিনি পরিষ্কার করে বলে গিয়েছিলেন যে, দল মত নির্বিশেষে সকলকে নিয়ে গণতন্ত্রের পক্ষে ঐক্য গড়ে তুলতে এবং এই ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করতে ঐক্য নিয়ে লড়াই করতে হবে।
তিনি বলেন, আজকে সুপরিকল্পিতভাবে জনগণের ঐক্যকে ভেঙে ফেলার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে মধ্য দিয়ে জনগণ যেভাবে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে বর্জন করেছে, সেই ঐক্যকে ভাঙতে চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, দেশনেত্রীর নির্দেশে এই ঐক্যকে আরো সুদৃঢ় করবো এবং এই শক্তিকে পরাজিত করবো। ঐক্য ভেঙে গেলে আর কোনোদিন সরাতে পারবো না। সেজন্য ছোট খাটো সমস্যাকে বড় করে না দেখে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। একই সঙ্গে জনগণের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের এক পর্যায়ে দর্শকসারি থেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে বিচ্ছিন্নভাবে প্রশ্ন করতে থাকেন। এসময় মির্জা ফখরুল তাদের মঞ্চে এসে প্রশ্ন করতে বলেন। দর্শক সারি থেকে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সহসভাপতি এইচএম রাশেদ মঞ্চের কাছে এসে জানতে চান, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সর্বশেষ যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এতে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাওয়া হয়নি কেন? এই প্রশ্নে উত্তরে ফখরুল বলেন, কে বলেছে আপনাকে এই কথা। অবশ্যই মুক্তি চাওয়া হয়েছে। ডোন্ট টেল লাই। এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি টিএস গিয়াসউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপি নেতা শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, শ্যামা ওবায়েদ, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Facebook Comments