মায়ের পছন্দেই বিয়ে করেছেন মোস্তাফিজ

শুক্রবার বিয়ে করছেন বাংলাদেশ পেস সেনসেশন মোস্তাফিজুর রহমান। অবশেষে গুঞ্জনটাকে সত্য প্রমাণিত করে নির্ধারিত দিনেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তিনি। একেবারে ঘরোয়া পরিবেশে, বাঙালি চিরাচরিত রীতিতে বরযাত্রী সহকারে কনের বাড়ি গিয়ে বিয়ে করলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের মোস্তাফিজুর রহমান। এরপর পড়ন্ত বিকালে নতুন বউ ঘরে তুলেছেন কাটার মাস্টার। শুক্রবার বেলা তিনটায় সাতক্ষীরার দেবহাটার হাদিপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সামিয়া পারভীনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন মোস্তাফিজ।তবে হঠাৎ এই বিয়ে প্রসঙ্গে তার কারণ জানিয়েছেন মোস্তাফিজের মেজো ভাই মাহফুজুর রহমান। তিনি জানিয়েছেন, মায়ের সিদ্ধান্তেই এভাবে হুট করে বিয়ের আয়োজন ২৩ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসারের। আরেকটি কারণ ক্রাইস্টচার্চ হামলায় তার ভীষণ ঘাবড়ে যাওয়া।বিশ্ব কাঁপানো ‘ফিজ খ্যাত’ কাটার মাস্টার মোস্তাফিজের বিয়ে বলে কথা। কনের বাড়িতে আগে থেকেই চলছিল সাজ সাজ রব। আত্মীয় স্বজনের কমতি ছিল না। বাদ পড়েনি মোস্তাফিজের বাড়িও। সেখানেও ক্ষীর খেলেন মোস্তাফিজুর রহমান। বরযাত্রী বহরের সাথে সাথে মোস্তাফিজ তার বাবা আবুল কাসেম আর মা মাহমুদা খাতুনকে নিয়েই পৌঁছালেন কনে সুমাইয়া পারভিন শিমুর বাড়িতে।বরকে সোজা নিয়ে যাওয়া হলো বাড়ির দোতলায়। সেখানে একটি কক্ষে অপেক্ষমান সবাই। সময় তখন ৩টা ছুঁই ছুঁই। মোস্তাফিজের মাথায় উঠলো টোপর। বিবাহ রেজিস্ট্রার দেবহাটার নোয়াপাড়ার কাজী আবুল বাসার তখনও অপেক্ষায়। অনুমতি নিয়ে অবশেষে কলেমা পড়ালেন ফিজ-শিমু দম্পতিকে। রেজিস্ট্রি কাগজপত্রে স্বাক্ষর করালেন। সাক্ষি হলেন কাটার মাস্টারের বড় ভাই মাহফুজুর রহমান মিঠু। আর দুই পক্ষের উকিল রবিউল ইসলাম ও আজিজুর রহমান। পাঁচ লাখ এক টাকার দেনমোহরে বাঁধা পড়লেন মোস্তাফিজুর রহমান আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী সুমাইয়া পারভিন শিমু।
তবে বিয়ের অনুষ্ঠান কোনো সাংবাদিক উপভোগ করতে পারেন নি। তারা কেবলই উঁকিঝুঁকি দিয়েছেন। পরিবারের লোকজন জানালেন, একেবারে ঘরোয়া পরিবেশে স্বজনদের সাথে নিয়ে প্রাথমিকভাবে শেষ করা হয়েছে এই বিয়ে। এরপর ধুমধাম করে অনুষ্ঠান হবে বিশ্বকাপের পর। তখন জানানো হবে সবাইকে।
মোস্তাফিজের স্বপ্নের রাণী তার মামাতো বোন শিমু ২০১৮ সালে দেবহাটার সখিপুর খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ কলেজ থেকে ‘এ প্লাস’ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। এর আগে ২০১৬ সালে নলতা হাইস্কুল থেকে তিনি গোল্ডেন ‘এ প্লাস’ পেয়ে পাস করেন এসএসসি। বরের বাড়ি কালীগঞ্জের তারালি ইউনিয়নের তেতুলিয়া গ্রাম থেকে জনা চল্লিশেক বরযাত্রীর বহর এসেছিল মাইক্রো-প্রাইভেট আর মোটরসাইকেলে। গন্তব্যস্থল দেবহাটা উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের হাদিপুর এলাকার জগন্নাথপুর গ্রাম। সেখানেই অপেক্ষায় ছিলে কনে শিমু। আনন্দঘন পরিবেশে সম্পন্ন হলো তাদের বিয়ে। এরপর মধ্যাহ্ন ভোজে আপ্যায়িত হলেন আমন্ত্রিতরা। সেই সাথে অবসান ঘটলো বহু প্রতীক্ষার।

Facebook Comments