বহিষ্কার হলেও এমপি থাকছেন সুলতান মনসুর

একাদশ সংসদ নির্বাচনে গণফোরাম থেকে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিজয়ী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় ইতোমধ্যেই তাকে গণফোরাম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সে হিসেবে শিগগিরই এ বিষয়টি জানিয়ে স্পিকারের কাছে চিঠিও দেবে দলটি। ফলে তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়ে যাবে, বলেই ধারণা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মত ভিন্ন। তারা বলছেন, দলকে থেকে বহিষ্কার করা হলেও, সুলতান মনসুরের এমপি পদ ঠিকই থাকছে।সুলতান মনসুরের শপথ গ্রহণ ও দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী বলেন, যদি দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করায় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।তার যুক্তি, এর মাধ্যমে সুলতান মনসুর দুদিক থেকে সমস্যায় পড়বেন। প্রথমত তিনি গণফোরামের সদস্য ও দ্বিতীয়ত বিএনপির প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। এখন দল বা জোটের সিদ্ধান্ত অমান্য করায় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং এর ভিত্তিতে সংসদ সদস্য থাকারও আইনগত ভিত্তিও ফুরিয়ে গেছে।তবে ভিন্ন যুক্তি দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেছেন, দল বা জোটের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর শপথ নিলেও, তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ গণফোরাম বা বিএনপির নেই।তার শপথের সাথে দলের সম্পর্ক নেই। শপথ নিলে দল বহিষ্কার করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না।সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের ক্ষেত্রে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ কার্যকর হবে না। ওই অনুচ্ছেদে সংসদ সদস্য হওয়ার পর কেউ দল থেকে পদত্যাগ করলে বা দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংসদে ভোট দিলে সদস্যপদ হারানোর কথা বলা হয়েছে।এদিকে আইন বিশেষজ্ঞ তানজিব উল আলম বলেন, সপ্তম সংসদে বিএনপি বিরোধী দলে থাকাকালে সংসদ বয়কট প্রশ্নে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সংসদ অধিবেশনে যোগ দেয়ার পর বিএনপি তাকে বহিষ্কার করে। সেটি নির্বাচন কমিশন ও সংসদের স্পিকারকে জানানো হয়েছিলো। পরে আদালত বলেছিলো দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ায় তার সদস্যপদ থাকবে না। এরপর সংসদের সদস্যপদ হারিয়েছিলেন বিএনপির মেজর (অব) আখতারুজ্জামান।কিন্তু সুলতান মনসুরের বিষয়টি ৭০ অনুচ্ছেদের আওতায় পড়বেন না বলেই মনে করেন তানজিব উল আলম।তিনি বলেন, এখানে সুলতান মনসুরের দল গণফোরাম, কিন্তু তিনি নির্বাচন করেছেন বিএনপির প্রতীকে। আবার বিএনপি যেহেতু সংসদে যাচ্ছে না তাই সেখানেও দলের বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার সুযোগ নেই সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদের। সে কারণে দলের বিপক্ষে ভোটদানের কারণে সদস্যপদ হারানোর ঝুঁকিও তার নেই।এসব কারণে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিলেও সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদের তার দল বা জোটের কিছু করণীয় থাকবে বলে মনে করেন না তিনি।

Facebook Comments