শিরোপায় টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট শেখ জামাল

২০ বলে ৪৫ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে শেখ জামালের দেওয়া ১৫৮ রানের লক্ষ্য নাগালে নিয়ে এসেছিলেন ফরহাদ। কিন্তু সোহানের দুর্দান্ত ক্যাচে তাকে থামতেই হয়। মিরপুরে বিগ ফাইনালে শেষ ৬ বলে জয়ের জন্য ২৮ রান লাগত প্রাইম দোলেশ্বরের।শহীদুলের প্রথম বলই তুলে মারতে গিয়েছিলেন ফরহাদ। কিন্তু ডানহাতি ব্যাটসম্যানের ব্যাট ছুঁয়ে বল যায় উইকেটের পেছনে। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে উড়ন্ত সোহান দুর্দান্ত ক্যাচ ধরে ফেরান দোলেশ্বরের অধিনায়ককে। সেখানেই ম্যাচ শেষ। ফরহাদ রেজার ২ চার ও ৫ ছক্কার ঝড়ের পরও তাদের রান ১৩৩। ২৪ রানের জয়ে ওয়ালটন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির শিরোপা জিতেছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব।দুদিন আগে দুই সেমিফাইনালে মিরপুরে রান বন্যা হলেও বিগ ফাইনালে তেমনটা হলো না। হাই স্কোরিং ম্যাচ হয়নি, মন্থর উইকেটে চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছোটেনি, ব্যাট-বলের প্রত্যাশিত উত্তাপ ছড়ায়নি। তবুও প্রতিদ্বন্দ্বীতা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত শেষ হাসিটা হেসেছে শেখ জামাল। তাদের ঘরেই উঠেছে ওয়ালটন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির প্রথম শিরোপা।টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে সতর্ক শুরু শেখ জামালের। দুই প্রান্তের দুই স্পিনারকে সামলে প্রথম দুই ওভারে মাত্র ৭ রান তোলেন ইমতিয়াজ হোসেন তান্না ও ফারদীন হাসান। তৃতীয় ওভারে খোলস থেকে বেরিয়ে আসেন ইমতিয়াজ। ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মারেন সুইপ করে ফাইন লেগ দিয়ে। পরের বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে চার। পঞ্চম বলে কভারের ওপর দিয়ে এবং ষষ্ঠ বলে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে আবারো চার তান্নার ব্যাটে। মাঝে একটি ডাবলসহ মোহাম্মদ আরাফাতের করা ওভারে ২০ রান তুলে শেখ জামাল দারুণ শুরু করে।ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানকে ফেরানোর দারুণ সুযোগ পেয়েছিল প্রাইম দোলেশ্বর। এনামুলকে এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে বলের লাইন মিস করেন ২৪ রান করা তান্না। স্টাম্পিংয়ের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন মোহাম্মদ আসলাম। পঞ্চম ওভারের চতুর্থ বলে মিড উইকেট দিয়ে আবার ছক্কা তান্নার ব্যাটে। হাঁটু মুড়ে বসে বিশাল ছক্কা হাঁকান ডানহাতি ব্যাটম্যান।সতীর্থ ফারদীন থেমে থাকেননি। সপ্তম ওভারের শেষ বলে এনামুলকে ছক্কা মারেন লং অফ দিয়ে। তবে বেশিক্ষণ এই ব্যাটসম্যানের ব্যাট হাসেনি। অষ্টম ওভারের চতুর্থ বলে পেসার মানিককে তুলে মারতে গিয়ে ডিপ কাভারে সাইফের হাতে ক্যাচ দেন ১৮ রান করা ফারদীন। নতুন ব্যাটসম্যান হাসানুজ্জামান হতাশ করেন। মুখোমুখি দ্বিতীয় বলে এনামুলকে রিভার্স সুইপে চার মেরে দারুণ শুরু করেছিলেন হাসানুজ্জামান। তৃতীয় বলে সুইপ করতে গিয়ে তার গ্লাভসের ছোঁয়া পেয়ে বল যায় উইকেটরক্ষক আসলাম হোসেনের হাতে।
ইনিংসের ১০তম ওভারে শেখ জামালের রান ২ উইকেটে ৭৫। ধারাবাহিক ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হওয়া নাসির হোসেন ফাইনালেও কিছু করতে পারেননি। ১১ ও ১৬ রানের পর আজ তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র ৫ রান। সৈকতের করা ১১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে পুল করতে গিয়ে ৫ রানে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন নাসির।শেখ জামালের সেমিফাইনালের নায়ক জিয়াউর রহমানের ব্যর্থ হয়েছেন ফাইনালের মঞ্চে। ফরহাদ রেজার বলে লং অনে ক্যাচ দেন মাত্র ২ রানে। ষষ্ঠ উইকেটে প্রত্যাশিত জুটি পায় শেখ জামাল। ৪৯ রান যোগ করেন কাজী নুরুল হাসান সোহান ও তানভীর হায়দার। তবে বড় স্কোরের জন্য শেষ দিকে যে ঝড়ের প্রয়োজন ছিল তা তুলতে পারেননি কেউ।তানভীর ১৫ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩১ এবং সোহান ২৭ বলে ৩ বাউন্ডারিতে করেন ৩৩ রান। শেষ দিকে শেখ জামালের রানের চাকা থামিয়ে রাখেন ফরহাদ রেজা। ৪ ওভারে ৩২ রানে ৩ উইকেট নেন ডানহাতি পেসার। এ ছাড়া একটি করে উইকেট নেন এনামুল, সানী, মানিক ও সৈকত।লক্ষ্য তাড়ায় দুর্দান্ত শুরু প্রাইম দোলেশ্বরের। পাওয়ার প্লে’তে ৩৮ রান তুলে ফেলেন সাইফ হাসান ও মোহাম্মদ আরাফাত। ৭ ওভারে দলের স্কোর ছুঁয়ে ফেলে পঞ্চাশ। অষ্টম ওভারে তারা সবথেকে বড় ধাক্কা হজম করে। ক্র্যাম্পে পড়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান ২৩ বলে ৩৩ রান করা মোহাম্মদ আরাফাত। ‍ তাদের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর থমকে যায় রানের চাকা। পরের ৪৩ বলে আসেনি কোনো বাউন্ডারি! মাঝে তারা হারায় চার গুরুত্বপূর্ণ উইকেট।শুরুটা সাইফ হাসানকে দিয়ে। সালাউদ্দিন শাকিলের স্লোয়ার বাউন্সারে তুলে মারতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দেন ২৬ রানে। সেমিফাইনালে ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়ানো মার্শালকে (৩) টিকতে দেননি পেসার শহীদুল। মাহমুদুল হাসান (৩) স্ট্যাম্পড হন সানী বলে এবং বল নষ্ট করে তরুণ মিনহাজুল আফ্রিদির বলে বোল্ড ফরহাদ হোসেন (৬)।

Facebook Comments