সামাজিক সচেতনতামূলক কর্মসূচী কমনসেন্স উদ্বোধন করল রবি

ডিজিটাল জীবনধারা বিকাশের সাথে সাথে তৈরি হওয়া নানা সামাজিক সমস্যার বিরূদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘কমনসেন্স’ নামে একটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে মোবাইল ফোন অপারেটর রবি। ডিজিটাল সেবা গ্রহণের সময় কোন কোন বিষয়ে সচেতন থাকা উচিত সে বিষয়গুলো তুলে ধরাই এ ক্যাম্পেইনের লক্ষ্য।আজ সোমবার,রাজধানীর একটি সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মসূচীটির উদ্বোধন করেন বাংলা সাহিত্যের শিক্ষক, ভাষা আন্দোলনের কর্মী, মুক্তিযোদ্ধা ও জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান।এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান এবং জনপ্রিয় অভিনেতা ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের নেতা ইলিয়াস কাঞ্চন।অনুষ্ঠানে রবি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, হেড অব কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স সাহেদ আলম, মিডিয়া, কমিউনিকেশন অ্যান্ড সাস্টেইনেবিলিটি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইকরাম কবীর উপস্থিত ছিলেন।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনটি সচেতনতামূলক ভিডিও প্রকাশ করা হয়। এই ভিডিওগুলো বাস্তব জীবনের আবহ দিয়ে সাজানো। ভিডিওগুলোতে সত্যতা যাচাই না করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কনটেন্ট শেয়ার করা, শিশুদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের সময় খেয়াল না রাখা এবং গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করার মতো ভুলগুলো তুলে ধরা হয়েছে।আগামী দিনগুলিতে এ ভিডিওগুলি বিভিন্ন জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে প্রচার করা হবে।অনলাইন সচেতনতামূলক ভিডিওর পাশাপাশি আচরণগত নানা দিক নিয়ে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে রবি’র; যেমন: রাস্তা পার হওয়ার সময় মোবাইল ফোনে কথা না বলা, একসাথে কয়েকজন কথা বলার সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার না করা, জনসমাগমস্থলে জোরে জোরে মোবাইলে কথা না বলা, মসজিদে যেন হঠাৎ মোবাইল ফোন বেজে না ওঠে সেদিকে খেয়াল রাখা, অনুমতি ছাড়া কারো ছবি না তোলা এবং অনলাইন প্রতারকদের হাত থেকে রক্ষা পেতে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।অনলাইন ভিডিও ও অ্যাক্টিভেশন এবং স্যোশাল মিডিয়া পোস্টগুলো সামাজিক সচেতনতা তৈরি করবে। এতে ডিজিটাল সেবা উপভোগের সময় কী ধরণের আচরণ করা উচিত বা কোন ভুল করছেন কিনা সে সম্পর্কে একজন ব্যক্তি সচেতন থাকতে পারবেন। এসএমএস ব্যবহারের ক্ষেত্রেও এ সচেতনতা কাজে লাগবে। পরবর্তীতে ডিজিটাল জীবনধারা সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য কাজ করবে ‘কমনসেন্স’।প্রধান অতিথি ড. আনিসুজ্জামান বলেন, আজ যে প্রাচীন প্রথাগুলো সমাজে প্রচলিত এগুলো সামাজিক স্থিতিশীলতার লক্ষ্যেই সৃষ্টি হয়েছিল। এ প্রথাগুলো যখন চালু হয়েছিল তখন অনেকেই এগুলো নিয়ে হাসাহাসি করেছিল, ঠিক যেমনটি হতে পারে আজকের #কমনসেন্স নিয়ে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, ডিজিটাল জীবনধারায় উদ্ভূত সামাজিক সমস্যগুলো মোকাবেলায় এ ধরণের পদক্ষেপ জরুরী। আজকের দিনে আমরা প্রযুক্তিকে এড়িয়ে চলতে পারিনা, এগুলো আমাদের জীবনের অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের যা প্রয়োজন তা হচ্ছে সঠিক দিক-নির্দেশনা; ঠিক #কমনসেন্স যা করছে। আমার বিশ্বাস, টেলিযোগাযোগ শিল্পের অন্যরাও এ পদক্ষেপকে একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে অনুসরণ করবে, তা নাহলে আমাদের মানবিক বোধ নিয়েই প্রশ্ন উঠবে।প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, শুধু মোবাইল নয়, প্রাত্যহিক জীবনের নানা বিষয়ে আমাদের কমনসেন্স বা কা-জ্ঞানের অভাব আছে। মোবাইল নিয়ে সচেতনতা তৈরিতে রবি’র এ চেষ্টাকে আমরা সমর্থন করি। এর সাথে আরো অন্যান্য বিষয় যদি তুলে আনা যায় তাহলে আরো ভাল হতে পারে। এ বিষয়ে রবি’র সাথে আমাদের যৌথভাবে কাজ করার সুযোগ আছে।রবি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা এমন একটি কোম্পানি যারা সবার জন্য ডিজিটাল জীবনধারা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। তাই ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে সমাজে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সে ব্যপারে আমরা উদাসীন থাকতে পারিনা। একটি সচেতন কোম্পানি হিসেবে আমরা #কমনসেন্স’র মতো পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি। আমরা এই প্লাটফর্মটিকে নৈতিক মানদ-ে উন্নিত করতে চাই যেন তা সুস্থ্য ধারার ডিজিটাল জীবনের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এমন একটি মুহুর্তে ড. আনিসুজ্জমানের উপস্থিত আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে।

Facebook Comments