হিমোগ্লোবিন বেশি হলে কী হয়?

দেশবাংলা ডেস্ক

রক্তে হিমোগ্লোবিন একটি অতি প্রয়োজনীয় উপাদান। রক্তে সাধারণত পুরুষদের ক্ষেত্রে ১৮.৫ আর নারীদের ক্ষেত্রে ১৬.৫ শতাংশ হিমোগ্লোবিন থাকা উচিত।তবে এর বেশি হয়ে গেলেই তা পলিসাইথিমিয়া নামের রোগের প্রধান লক্ষণ।চিকিৎসকদের মতে,হিমোগ্লোবিন বেড়ে গেলে রক্ত ঘন হয়ে যায়।এতে ছোট ছোট রক্তের দলা তৈরি হওয়ার সুযোগ বাড়ে। পলিসাইথিমিয়া দুই রকম হয়।একটি প্রাইমারি ও অন্যটি সেকেন্ডারি।প্রাইমারি রোগ হয় অস্থিমজ্জা বা বোনম্যারোতে। যদি এখানে রক্ত তৈরি হওয়ার পদ্ধতিতে কোনো সমস্যা হয়। লাখে একজন মানুষের এই সমস্যা হতে পারে আর এটি একেবারেই বংশগত নয়। অন্যদিকে সেকেন্ডারি পলিসাইথিমিয়া তুলনামূলক বেশি হয়। যার প্রধান কারণ-কিছু বংশগত সমস্যা, কিডনি বা লিভার ক্যান্সার জাতীয় সমস্যায় এই রোগ হতে পারে।দীর্ঘদিন ধরে প্রচুর ধূমপান বা খুব বেশি পরিবেশ দূষণের মধ্যে কাজ করলে এই অসুখ হয়।অনেক দিন গ্যারেজে, মাটির নীচে খনি বা খোদাই এর কাজ করলে এই রোগের আশঙ্কা থাকে৷কায়িক পরিশ্রমের কাজ করেন এমন উদ্বেগের মধ্যে থাকা মধ্যবয়সী পুরুষদের এ ধরনের রোগ হতে পারে
সায়ানোটিক হার্ট ডিজিজ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ বা সিওপিডি, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া ইত্যাদি অসুখ থাকলে বেশি হিমোগ্লোবিন তৈরি হয়।
লক্ষণ
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রক্ত পরীক্ষা না করলে কিছু বোঝা যায় না।
গাল বা মুখ, হাত, পায়ের তলা একটু লালচে হতে পারে।
মাথাব্যথা, চুলকানি, ক্লান্তি, মাথাঘোরা, পেটে ব্যথা থাকে অনেকের।
নাক, পাকস্থলি বা অন্ত্রে রক্তপাত হয় কিছু ক্ষেত্রে।
ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গাউট হতে পারে। সঙ্গে কোমর–পাঁজরে সব সময়েই ব্যথা হয়।
হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়ে।
রক্তচাপ বাড়ে অনেকের। অসুখটি শরীরে থাকতে থাকতে লিভার বড় হয়ে যেতে পারে।
চিকিৎসা
রুটিন রক্ত পরীক্ষায় হিমোগ্লোবিন বেশি পাওয়া গেলে বড় পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
পরীক্ষায় কিছু না পাওয়া গেলে বোনম্যারো পরীক্ষাও করতে হয়।
প্রাথমিক রোগে তেমন জটিলতা না থাকলে চিকিৎসা ছাড়াই রোগী ভাল থাকেন।
পানিশূন্যতা যাতে না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখতে হয়।
বেশি আয়রনযুক্ত খাবার ও ধূমপান করা নিষেধ।
লিভার বড় হয়ে গেলে পেটে ধাক্কা লাগে এমন খেলাধূলা না করাই ভাল।
প্রাইমারি পলিসাইথিমিয়ার মূল চিকিৎসা মাঝেমধ্যে এক বা আধা বোতল করে রক্ত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে বের করে নেয়া।
রক্ত দলা বাঁধার আশঙ্কা থাকলে খাওয়ার কেমোথেরাপি ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয় অনেক সময়।
রক্ত দলা বাঁধার প্রবণতা কমাতে অ্যাসপিরিন দেয়া হয় অনেক সময়ে। তবে রক্তপাতের সম্ভাবনা থাকলে এই ওষুধ দেয়া যায় না।

Facebook Comments